তফসিলি জাতি, উপজাতিদের নিগ্রহে অভিযুক্তরা আগাম জামিন পাবেন না। তদন্ত ছাড়াই অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করা যাবে। সোমবার সুপ্রিম কোর্টে বিচারপতি অরুণ মিশ্রের নেতৃত্বাধীন তিন বিচারপতির বেঞ্চের অন্য সদস্যরা ছিলেন বিচারপতি বিনীত শর্মা এবং রবীন্দ্র ভাট। তফসিলি জাতি, উপজাতিদের উপর নিগ্রহ দমন আইন ২০১৮–র সংশোধনীতে সাংবিধানিক বৈধতা বহাল রেখে বেঞ্চ এদিনের রায়ে বলেছে, এফআইআর দায়েরের আগে প্রাথমিক তদন্ত এবং শীর্ষ পুলিস অফিসারের অনুমোদন নিষ্প্রয়োজন। যদি প্রাথমিক মামলা দায়ের না করা হয় তাহলেই আদালত অভিযুক্তকে আগাম জামিন দিতে করতে পারবে। বিচারপতি ভাট বলেন, দেশের প্রত্যেক নাগরিকের অন্য নাগরিককে ভ্রাতৃত্বের মানসিকতায় দেখা উচিত। রায় পড়ে শোনানোর সময় তিনি আরও বলেছেন, যদি তফসিলি জাতি, উপজাতি মামলার আওতায় প্রাথমিক তদন্ত না করা হয় তাহলে আদালত এফআইআর বাতিল করতে পারে। এবং আগাম জামিনের যথেচ্ছ ব্যবহার সংসদের মানসিকতায় খারাপ প্রভাব ফেলবে।
চিকিৎসক সুভাষ কাশীনাথ মহাজন এবং মহারাষ্ট্র সরকারের মধ্যে হওয়া মামলায় ২০১৮ সালের মার্চে সুপ্রিম কোর্ট এই রায় দিয়েছিল। তারপর সেটাকে লঘুকরণের উদ্যোগে তফসিলি জাতি, উপজাতি আইন ২০১৮–য় সংশোধন করে ১৮(এ) ধারা যুক্ত করেছিল সংসদ। যার ফলে ওই মামলায় সুপ্রিম কোর্টের রায় নষ্ট হয়ে যায়। ওই রায়ে শীর্ষ আদালত তফসিলি জাতি, উপজাতি আইনের অবমাননা এবং রক্ষাকবচ বসিয়ে ভুয়ো অভিযোগ দায়েরের বিপক্ষে প্রতিক্রিয়া দিয়েছিল। রক্ষাকবচগুলির মধ্যে অন্যতম ছিল কোনও অবস্থাতেই ওই আইনের আওতায় আগাম জামিন নেওয়া আটকানো যাবে না। সংশোধনীতে বলা হয়েছিল, এফআইআর দায়েরের আগে প্রাথমিক তদন্ত আবশ্যিক এবং গ্রেপ্তারির জন্য তদন্তকারী অফিসার নিয়োগ করতে হবে। কোনও সরকারি কর্মীর বিরুদ্ধে এই অভিযোগ উঠলে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের অনুমতি নিয়েই গ্রেপ্তার করতে হবে।
বেসরকারি কর্মীর ক্ষেত্রে সিনিয়র এসপি–র অনুমতি আবশ্যিক। সংশোধনীর বিরুদ্ধে সারা দেশে দলিত সম্প্রদায়ের বিক্ষোভ শুরু করে। সংশোধনী আইনের বিরুদ্ধে এই মর্মে আদালতে আবেদন দায়ের হয় যে ওই সংশোধনী আইন সংবিধানের ১৪ এবং ২১ নম্বর ধারায় বাঁচার সমানাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে। এরপর ২০১৯–র অক্টোবরে ২০১৮–র মার্চের রায় পাল্টে আবেদন পুনর্বিবেচনার অনুমতি দিয়েছিল।