কেন্দ্রীয় বাজেটে নেই কৃষকদের মুনাফার বিষয়ে কোনো স্পষ্ট নির্দেশিকা। সেকারণেই ক্ষুব্ধ কৃষকেরা। সূত্র বলছে, এক বিঘা আলু চাষ করতে খরচ হয় ২৫ হাজার টাকা। আর গড়ে ১০০ বস্তা আলু উৎপাদন হয়। সেই আলু বস্তাপিছু গড়ে বিক্রি হয় ২৫০ টাকায়। অথচ আলুর বর্তমান দর বস্তাপিছু ৭০০ টাকারও বেশি। ফলে মুনাফা লুঠছে বড় ব্যবসায়ীরা এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না।
বাগিচা ফসল হিসেবে আম, পেঁপে, পেয়ারা, কলার চাষ হচ্ছে। কিন্তু এইসব ফসলের যম হচ্ছে কালবৈশাখী, ঘূর্ণিঝড়ের মতো বিভিন্ন প্রাকৃতিক বিপর্যয়। খরিফ ও রবিশস্যের মাঝে চাষ হওয়া বাগিচা ফসল বাঁচানো বা চাষে উৎসাহদানের কোনও দিশা বাজেটে না থাকায় হতাশ বহু কৃষক।
নির্মলা সীতারামনের পেশ করা বাজেটে গ্রামাঞ্চলের কৃষক, মৎস্যজীবী, তন্তুজীবী, কামার, কুমোর–সহ মানুষজনের আর্থিক উন্নতি সম্পর্কে কিচ্ছু বলা নেই। কৃষি ও অর্থনীতি গবেষক দেবাশিস নাগের বক্তব্য, ‘কৃষক–সহ উৎপাদন ব্যবস্থার প্রতিটি স্তরে যুক্ত মানুষ যাতে উৎপাদিত পণ্যের ঠিকঠাক দাম পেয়ে লাভের মুখ দেখেন, তার প্রতিফলন ঘটানোই হল আদর্শ বাজেট। তাতে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও খাদ্যের জোগান নিশ্চিত হয়। এবারের কেন্দ্রীয় বাজেটে এই সাধারণ তত্ত্বটিকেই অস্বীকার করা হয়েছে।’
শুধু তাই নয়, ‘শস্যগোলা’ হিসেবে খ্যাত পূর্ব বর্ধমান জেলার বহু কৃষক পাট চাষ করেন। পরিবেশবান্ধব হিসেবে যেখানে পাটের ব্যবহার বাড়ানো দরকার, সেখানে এ ব্যাপারে বাজেটে স্পষ্ট কোনও নীতিই নেই।
দেশের প্রকৃত জিডিপি (গ্রস ডোমেস্টিক প্রোডাক্ট) তখনই বাড়ে, যখন দেশের সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বাড়ে। কিন্তু এবারের কেন্দ্রীয় বাজেটে মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বাড়ানোর কোনও স্পষ্ট পথনির্দেশ নেই। উল্লেখ্য, যে গত বাজেটে জিডিপি–র লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৭ শতাংশ। অর্জিত হয়েছে মাত্র ৫ শতাংশ।