উত্তরবঙ্গের চা শ্রমিকদের জন্য এবারের রাজ্য বাজেটে চা-সুন্দরী প্রকল্পের ঘোষণা করে রাজ্যের বাজেটে নতুন চমক এনেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। বিরোধীদের বক্তব্য ২০২১-এর বিধানসভা ভোট লক্ষ্য করেই এই নতুন বাজেটের প্রস্তাব করেছেন রাজ্য সরকার। রাজ্যজুড়ে প্রায় তিন লক্ষাধিক চা-শ্রমিককে স্থায়ী বাসস্থান দিতে ‘চা-সুন্দরী’ প্রকল্পের ঘোষণা করেন অর্থমন্ত্রী।
অমিত মিত্র বলেন, ‘রাজ্যে প্রায় ৩৭০টি চা বাগান আছে। সেখানে তিন লক্ষাধিক চা-শ্রমিক কাজ করেন। তাঁদের মধ্যে ৫০ শতাংশই মহিলা। এই চা-শ্রমিকদের বেশিরভাগই আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষ। তাঁদের বেশিরভাগেরই মাথা গোঁজার জায়গা নেই। ‘চা-সুন্দরী’ প্রকল্পের আওতায় আগামী তিন বছর রাজ্য সরকার চা-বাগানে স্থায়ীভাবে কর্মরত গৃহহীন শ্রমিকদের আবাসনের ব্যবস্থা করবে। তার জন্য আগামী অর্থবর্ষে ৫০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করার কথা প্রস্তাব করা হয়েছে।’
আর এই ঘোষণার পরপরই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারকে প্রশংসায় ভরিয়ে দেন জিটিএ প্রধান বিনয় তামাং। প্রেস বিজ্ঞপ্তি জারি করে তিনি লেখেন, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, দার্জিলিং পাহাড়ের ৮৭ চা বাগানের ৬৭০০০ শ্রমিক আপনাকে অকুণ্ঠ ধন্যবাদে ভরিয়ে দিচ্ছেন। চা শ্রমিকদের দুর্দশা আপনাকে বারবার ভাবিয়েছে, আপনি তাঁদের জন্য বারবার সদর্থক পদক্ষেপ নিয়েছেন। কিন্তু এবারের বাজেটে তাঁর মাথায় ছাদ গড়ে দিতে আপনার সরকারের ঘোষণা তাঁরা চিরদিন মনে রাখবে।’ শুধু তাই নয়, চা বাগানের জন্য কৃষিক্ষেত্রে আয়কর মকুবের যে ঘোষণা করা হয়েছে, তার জন্যও ধন্যবাদ জানিয়েছেন বিনয় তামাং।
যদিও নিন্দুকেরা বলেছেন, গত লোকসভা ভোটে পশ্চিম বাংলার চা বলয়ে তৃণমূলের ভরাডুবি ঘটেছে। আলিপুরদুয়ার, দার্জিলিং, জলপাইগুড়িতে বিজেপির জয়জয়কার। জন বারলা থেকে জয়ন্ত রায়, চা শ্রমিকদের মধ্যে বিপুল জনপ্রিয়তার জেরেই জয়ী হতে পেরেছেন গেরুয়া শিবিরের প্রত্যেক প্রার্থী। কিন্তু বিধানসভা জিততে হলে চা বাগান হারালে চলবে না, আর সেকথা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিলক্ষণ জানেন। তাই হারানো জমি ফিরতে পেতে এবার চা বাগানে দরাজহস্ত হবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সে তো জানা কথাই ।