যখন একদিকে নিজেদের পড়শি ক্লাব ইস্টবেঙ্গল রীতিমত ধুঁকছে, ঠিক সেসময় বসন্তের খুশির বাতাস মোহনবাগানে। শেষ নয় ম্যাচে অপরাজিত থাকা কিবু ভিকুনার দল এদিন কল্যাণীতে নামছে পাঞ্জাব এফসির বিরুদ্ধে। প্রথম পর্বে লিগ শীর্ষে থাকা মোহনবাগানের বিরুদ্ধে দিপান্দা ডিকার দুর্দান্ত গোলে এগিয়েও ড্র করেছিল সেই পঞ্জাব এফসি। শনিবার সকালে মোহনবাগান তাঁবুতে সাংবাদিক সম্মেলন করতে এসে কলকাতার ভূমিপুত্র ও পাঞ্জাব কোচ ইয়ানের তাই আফসোস যাচ্ছিল না। গড়চায় বেড়ে ওঠা ইয়ান বলছিলেন, ‘চারটে ম্যাচ রক্ষণের ভুলে ড্র করেছি। না হলে শীর্ষেই থাকতাম।’
১০ ম্যাচে ২৩ পয়েন্ট নিয়ে আই লিগের শীর্ষে রয়েছে মোহনবাগান। সমসংখ্যক ম্যাচে ১৭ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে পাঞ্জাব। রবিবার কল্যাণীতে কিবু ভিকুনার দলকে হারিয়ে খেতাব-দ্বৈরথে এগোতে মরিয়া পাঞ্জাব। যে দলে ডিকা, কিংসলে, সঞ্জু প্রধান, নির্মল ছেত্রী, কেভিন লোবোর মতো কলকাতা ফেরতরা গিজগিজ করছেন। ইয়ান বলেন, ‘হারলে মোহনবাগান নয় পয়েন্টে এগিয়ে যাবে। খেতাবের দৌড়ে থাকতে গেলে জিততেই হবে।’
বিপক্ষ কোচের এহেন মন্তব্য শুনে মৃদু হাসলেন বাগান কোচ কিবু। বলেন, ‘যে দলই জিতুক এখনও ১০ ম্যাচ বাকি। অনেক উত্থান-পতন হবে। লিগের লড়াই এ বার বেশ কঠিন।’ শনিবারের মেঘলা বিকেলে বেইতিয়া, শেখ সাহিলদের ফুরফুরে মেজাজে রাখতে শুরুতে মজাদার সব অনুশীলন করালেন মোহনবাগান কোচ! ফ্রান গঞ্জালেসরা বল নিয়ে দৌড়ানোর সময়ে আর একটি বল দুই হাতে দিয়ে শরীরের চারপাশে চক্রাকারে ঘোরাতে হচ্ছিল। কখনও বা দুই হাতে দু’টি বল দেওয়া হচ্ছিল ছোটার সময়ে।
কিবু জানেন ডিকার কথা। শিকারি বাঘের মতো বক্সের চারপাশে ঘুরঘুর করেন। সুযোগ পেলেই গোল করে যান লিগে আট গোল করে আপাতত সর্বোচ্চ গোলদাতা ডিকা। তাঁকে নির্বিষ করতে জোনাল মার্কিংয়েই ভরসা রাখছেন কিবু। এ দিন অনুশীলন দেখে তেমনই মনে হল। মোহনবাগান কোচ বলে দেন, ‘ও গোলের পর গোল করছে। ডিকার উপর কড়া নজর থাকবে। ওকে রোখার অঙ্ক তৈরি আছে আমার।’
পাশাপাশি দ্রুত প্রতি-আক্রমণ শানিয়েও গোলের দরজা খুলে ফেলার ও বিপক্ষ বল পেলে পাল্টা তাড়া করার মহড়া এ দিন জোরকদমে হল সবুজ-মেরুন শিবিরের অনুশীলনে। পাঞ্জাব শিবিরের মুখে আবার হাসি ফুটিয়েছে ডিফেন্ডার ড্যানিয়েল সাইরাস মাঠের বাইরে থাকায়। যে প্রসঙ্গে তাদের স্ট্রাইকার গিরিক খোসলা বলছেন, ‘তার মানে ফ্রান গঞ্জালেস ফের রক্ষণে। বেইতিয়া একটু নিচে নেমে খেলবে। ওর নিখুঁত পাস কম আসবে আমাদের রক্ষণে।’ জবাবে কিছু বললেন না বেইতিয়া। মুচকি হেসে মাঠ ছেড়ে ড্রেসিংরুমে চলে গেলেন। বুঝিয়ে দিলেন, কথায় নয়, বরং জবাবটা মাঠেই দিতে পছন্দ করেন তিনি।