এটিকের রাগি চেহারার মেজাজি স্প্যানিশ কোচ আন্তোনিও লোপেজ হাবাসের শনিবাসরীয় রাতে খুশি হওয়ারই কথা। ইন্ডিয়ান সুপার লিগে শেষ চারে ওঠা নিশ্চিত করার পাশাপাশি ফের লিগ শীর্ষে উঠে গেল তাঁর দল এটিকে। টানা ছয় ম্যাচ অপরাজিত থাকার সঙ্গে শেষ চার ম্যাচে জয়ের মুকুট। লাল-সাদা জার্সির হেডমাস্টার তো গর্বিত হবেনই। এদিন ম্যাচ শেষে হাবাস যখন নাচছেন, তখন দেখা গেল তার একটু দূরেই এক বঙ্গসন্তান প্রবীর দাসের সঙ্গে নাচছেন এ দিনের ‘হ্যাটট্রিক বয়’ রয় কৃষ্ণও। যিনি সারথি হয়ে আজ পরিচালনা করলেন এটিকের জয়রথ। মূলত তাঁর করা ৩টি গোলেই এদিন জিতল কলকাতার টিম।
কৃষ্ণের তিন তিনটি গোল দেখে মনে হল তিনটি রংমশাল বা তুবড়ি। যার স্ফুলিঙ্গ যুবভারতীকে আরও আলোকিত করে দিল। প্রথম গোলটা করলেন জাভি হার্নান্দেসের কর্নার থেকে। মাটিতে বল পড়ার আগেই হাফ ভলি। দ্বিতীয় গোলটা নিজের উপস্থিত বুদ্ধি আর গতির সংমিশ্রণের ফসল। পেনার কাছ থেকে বল পেয়ে তীব্র গতিতে তিরিশ গজ দৌড়ে ওড়িশা বক্সে ঢোকার সময় কৃষ্ণকে মনে হল ‘রাজধানী এক্সপ্রেস’। সামনে ওড়িশার স্পেনীয় গোলকিপার ফ্রান্সিসকো রোমান এগিয়ে আসছেন দেখে তাঁর মাথায় উপর দিয়ে বলটা তুলে দিলেন হাবাসের দলের সেরা স্ট্রাইকার। শেষ গোলটা হল জয়েশ রানের পাস থেকে। বিরতির পরে এটিকে ৩-০ করে ফেলল ৬৪ মিনিটের মধ্যেই। দু’মিনিট পরে ব্যবধান কমাল জোসেফ গাম্বোর দল। ম্যানুয়েল ওনুর গোলে।
এটিকে কোচ বললেন, ‘এই আইএসএলে এটাই সেরা ম্যাচ। পরের দুটি ম্যাচ জিতে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে খেলাই লক্ষ্য আমাদের।’ কৃষ্ণের দু’নম্বর গোলকে ‘অসাধারণ’ বলে দিয়েছেন তিনি। এর আগে চার ম্যাচে গোল ছিল না কৃষ্ণের। শুরু হয়েছিল সমালোচনাও। কিন্তু সব হিসাব উল্টে দিয়ে কৃষ্ণ দেখালেন, তিনি যে কোনও সময়ই ‘অবতার’ হয়ে দেখা দিতে পারেন দলে। পরপর দু’ম্যাচে পাঁচ গোল- শেষ কবে কোন ভারতীয় ফুটবলার এই সাফল্য পেয়েছেন তা খুঁজতে দূরবিন লাগবে। প্রতিযোগিতার সর্বোচ্চ গোলদাতা হয়ে সোনার বুটের অন্যতম দাবিদার হিসাবে নিজেকে তুলে ধরলেন কৃষ্ণ।