বিপ্লব দেবের আমলে বিজেপি দলেই কোনও গণতন্ত্র নেই। সরকারেও চলছে একনায়কতন্ত্র। ত্রিপুরার বিজেপি নেতারাই দিল্লিতে প্রতিনিয়ত এমনই নালিশ জানিয়ে চলেছেন। আগরতলার স্থানীয় দৈনিকের খবর, দলের বেশিরভাগ বিধায়কই ক্ষুব্ধ বিপ্লবের ওপর। ক্ষুব্ধ সাধারণ মানুষও। রাজ্যের উন্নয়ন প্রায় বন্ধ। চরম হতাশায় দিন কাটাচ্ছেন বেকার যুবকরা। সরকারি নিয়োগ বন্ধ। পাবলিক সার্ভিস কমিশনের মাধ্যমে যেসব চাকরি মিলত সেগুলিও এখন আউটসোর্সিং হচ্ছে। চরম রক্তসঙ্কটে ভুগছে রাজ্যের বেশিরভাগ ব্লাড ব্যাঙ্ক। অথচ, মুখ্যমন্ত্রী ব্যস্ত ঘনঘন দিল্লি যাত্রায়। বলছেন বিজেপি নেতারাই।
১৫ জানুয়ারি ত্রিপুরায় বিজেপির নতুন প্রদেশ সভাপতি হিসাবে নির্বাচিত হন ডাঃ মানিক সাহা। বিপ্লব–বিরোধীরা বলছেন, নির্বাচনের নামে প্রহসনের মাধ্যমে ‘রাবারস্ট্যাম্প’ হিসাবে বিপ্লব বেছে নেন মানিকবাবুকে। তাঁদের যুক্তি, মাত্র আড়াই বছর আগে বিজেপিতে নাম লিখিয়ে রাজ্য সভাপতি হওয়ার দ্বিতীয় কোনও নিদর্শন গোটা দেশেই নেই। বিপ্লব–ঘনিষ্ঠ মানিকবাবুর বিপক্ষে প্রার্থীই দেওয়া যায়নি। জানা গিয়েছে, ত্রিপুরায় রাজ্য সভাপতি হওয়ার দৌড়ে ছিলেন অনেকেই। ৫৬ জন ভোটারের মধ্যে ২৬ জনের সমর্থন জোগাড় করেও মনোনয়ন দিতে পারেননি এক বিধায়ক। আরও একজন ১২ জনের সমর্থন জোগাড় করেও দিতে পারেননি মনোনয়ন। তাঁদের আটকাতে পুলিশ–প্রশাসনকেও কাজে লাগানোর অভিযোগ উঠেছে। নালিশ জমা পড়েছে দলের সাংগঠনিক সম্পাদক সন্তোষজির কাছেও। গোটা শহর ছয়লাপ বিপ্লবের ছবিতে। কোথাও নেই প্রদেশ সভাপতির ছবি। এমনকী, এক মাস হতে চললেও সংবর্ধনারও খবর নেই। দলের রাশ বিপ্লবের হাতেই। আদি ও নব্য বিজেপি, সকলেই হতাশ। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকারের আমলে রক্তদান ত্রিপুরায় আন্দোলনের চেহারা নেয়। বিপ্লব মন্ত্রিসভায় স্বাস্থ্য দপ্তরের ভার নিয়েই দলীয় রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠে রক্তদান আন্দোলনকে আরও বড় চেহারা দেন সুদীপ রায়বর্মন। তিনি নিজেও তিন মাস অন্তর রক্ত দিতে থাকেন।
কিন্তু সুদীপকে মন্ত্রিসভা থেকে বাদ দিয়ে দেন বিপ্লব। এরপরই মুখ থুবড়ে পড়ে রক্তদান। ফলে, দেখা দিয়েছে ব্যাপক রক্তসঙ্কট। অপারেশন বন্ধ।