২০২১-এ বাংলার ক্ষমতা দখলের দিবাস্বপ্ন দেখছে যখন বিজেপি, তখন ক্রমশই প্রকাশ্যে চলে আসছে জেলায় জেলায় তাদের দলের অন্তর্দ্বন্দ। প্রায় রোজই রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে দলের প্রতি ক্ষোভ উগড়ে দিয়ে গেরুয়া শিবির ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিচ্ছেন শয়ে শয়ে কর্মী। এরই মধ্যে এবার ‘বিজেপি সাফাই অভিযান মঞ্চ’ গড়ে জেলা বিজেপি নেতৃত্বের বিরুদ্ধে পথে নামছেন বিক্ষুব্ধ নেতা-কর্মীরা। আগামী ১০ তারিখ পুরুলিয়া শহরের ট্যাক্সি স্ট্যান্ডে এই মঞ্চের একটি প্রকাশ্য জনসভার আয়োজন করা হয়েছে। ওই জনসভায় নিজের ক্ষোভের কথা জানাবেন শহরের উত্তর মণ্ডলের সহ সভাপতি নির্মল কেশরী। তাঁর সঙ্গে রয়েছেন বিজেপি’র সম্পাদক তথা ২০১৬-এর পুরুলিয়া বিধানসভার বিজেপি প্রার্থী নগেন ওঝা, প্রাক্তন ওবিসি মোর্চার পুরুলিয়া শহর সভাপতি বাবাই সেন-সহ বিজেপির প্রাক্তন নেতা-কর্মীরা।
এ প্রসঙ্গে নির্মল কেশরী বলেন, বর্তমানে হিটলারের কায়দায় জেলা নেতৃত্ব দল চালাচ্ছে। ভয়ে কেউ মুখ খুলতে চাইছে না। জেলার মানুষ জানুক কী অবস্থায় চলছে। দল নিজের বক্তব্য রেখে ‘শহীদ’ হতেও তাঁর আপত্তি নেই বলে তিনি ক্ষোভ উগরে দেন। বিজেপি’র প্রাক্তন ওবিসি মোর্চার শহর সভাপতি বাবাই সেন বলেন, ‘গত ২৫ ডিসেম্বর প্রয়াত প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপায়ীর জন্মদিনের অনুষ্ঠানে শহরের দুলমি এলাকার লোকসভা অফিসে মহিলা মোর্চার দুই নেত্রীর মধ্যে ধস্তাধস্তি ও মারামারি হয়। জেলা মহিলা মোর্চার জেলা সভানেত্রী কাবেরী চট্টোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতে ওপর মহিলা নেত্রী বাবলি বন্দ্যোপাধ্যায়কে মারা হয়। জেলা সভাপতি বিদ্যাসাগর চক্রবর্তীর উপস্থিতিতে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ উঠছে। তার কোন প্রতিবাদ হয়নি। ১০ ফেব্রুয়ারি জনসভা করে মানুষের কাছে জানতে চাইব পুরুলিয়ার মানুষ ডঃ শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের বিজেপি চাইছেন? না ব্যবসায়ী বিজেপি চাইছেন।’
নির্মল কেশরীর সঙ্গে সহমত পোষণ করে নগেন ওঝা বলেন, পুরুলিয়া বিজেপি নেতৃত্বের প্রতি বেশ কিছু বিক্ষুব্ধ নেতা-কর্মীর দীর্ঘদিনের ক্ষোভ রয়েছে। তার বহিঃপ্রকাশ হতে চলেছে ১০ ফেব্রুয়ারি। শুধু আমি নই, আমার মতো অনেকেই যারা একসময় বিজেপি করে এসেছেন, তাদের কাউকে বসিয়ে রাখা হয়েছে নয়তো কাউকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। বিজেপি’র ভোট বাড়লেও তা হয়েছে ঝড়ে। পুরুলিয়া বিজেপি’র সংগঠন এখনও দুর্বল। ঝড়ে সব সময় ভোট হয় না। সংগঠনের দরকার। এদিকে, গত ২৫ ডিসেম্বর অটলবিহারি বাজপেয়ীর জন্মদিনের দলীয় কার্যালয়ে মহিলা মোর্চার নেত্রীদের মারপিটের ভিডিও বেশ কয়েকদিন থেকেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হচ্ছে। যা এখন পুরুলিয়ার রাজনৈতিক মহলে বেশ চর্চার বিষয়।