সামান্য ফুচকা বিক্রেতা থেকে জাতীয় যুব দলের হয়ে বিশ্বকাপে শতরান – যশস্বী জয়সওয়ালের জীবন সংগ্রামের কাহিনী আজ গোটা ভারতবর্ষের কাছে জানা। তবে স্রেফ যশস্বী নয়, বর্তমান ভারতীয় অনূর্ধ্ব-১৯ ক্রিকেট দলে এমন আরও অনেক তারকা আছেন, যাদের জীবনযুদ্ধের কাহিনীটা যশস্বীর মতো প্রস্তরবৎ না হলেও বেশ কঠিন। যেমন অথর্ব আঙ্কোলেকর। তিনিও মুম্বইকর। তাঁর মা বাসে কন্ডাক্টারি করে অতি কষ্ট করে বড় করেছেন তাঁকে।
বৃহন্মুম্বই ইলেক্ট্রিসিটি সাপ্লাই ও ট্রান্সপোর্ট (বেস্ট) সিস্টেমের হয়ে কাজ করেন অথর্বর মা বৈদেহী। তিনি বলেন, ‘অবশ্যই এটা ওর জীবনের অন্যতম বড় মুহূর্ত। যদি ফাইনালে ভারত জেতে, তাহলে ওর জীবনে আরও অনেক সুযোগ পাবে, ওর আত্মবিশ্বাস অনেকটাই বেড়ে যাবে।’
গত ডিসেম্বর মাসে আইপিএল অকশনে ছিল অথর্বের নাম, বেস প্রাইস ছিল ২০ লক্ষ। সেই দামেও কেউ যদি তাঁকে কিনত তাহলে দুঃখ অনেকটাই নিরাময় হয়ে যেত। কিন্তু নিলামে দল পাননি ওই তরুণ। তাই অথর্বের কাছে শেষ আশা রবিবারের ওই যুব বিশ্বকাপের ফাইনাল ম্যাচটাই।
আইপিএলের নিলামে দল না পাওয়া নিয়ে অথর্বর মা জানান, ‘এই বছর আইপিএলের কোনও দল ওকে না কেনায় খুব মুষড়ে পড়েছিল। কিন্তু আইপিএল প্রতিবছর হয়। কিন্তু অনূর্ধ্ব-১৯ যুব বিশ্বকাপ ফাইনাল খেলার সুযোগ জীবনে আর আসবে না।’
অথর্বর বাবা নিজে একজন ক্লাব ক্রিকেটার ছিলেন এবং বাসের কন্ডাক্টারি করতেন। কিন্তু অথর্বর বয়স যখন মাত্র ১০ তখন তাঁর পিতৃবিয়োগ হয়। অথর্বর এক ভাইও আছে। ফলে দুই ছেলেকে নিয়ে সংসারের হাল ধরতে কন্ডাক্টারি শুরু করেন অথর্বর মা বৈদেহী দেবী। দিন বদলের আশায় তাই রবিবার ছেলের সাফল্য চাইছেন তিনিও।
নিজের মায়ের জন্যই বিশ্বসেরার ট্রফিটা জিততে চান অথর্ব। কারণ তাঁর আশা বিশ্বকাপ জিতলেই জীবন থেকে মিটে যাবে সব দুঃখ-কষ্ট, আর বাসে বাসে কন্ডাক্টারি করতে হবে না মাকে।