এনআরসি-সিএএ-এনপিআর নিয়ে উত্তাল গোটা দেশ। প্রথম থেকেই এ নিয়ে সরব হয়েছিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নিজে পথেও নেমেছেন কেন্দ্রের এই জনবিরোধী আইনের বিরুদ্ধে। এবার সরব হল সিএএ বিরোধিতায় সরব হল তাঁর দলের মহিলা শাখাও। বৃহস্পতিবার এনআরসি-সিএএ-এনপিআরের বিরুদ্ধে গোলপার্ক থেকে হাজরা পর্যন্ত মৌন মিছিল করে তৃণমূলের মহিলা কংগ্রেস। কলকাতা পুরসভার সামনে বিদ্যুৎমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে হয় ওই মৌন মিছিল।
গতকাল আট থেকে আশি- শয়ে শয়ে মহিলা কালো পোশাক পরে, মুখে কালো কাপড় বেঁধে গোলপার্ক থেকে হাজরা পর্যন্ত হাঁটেন। সকলের বুকে ঝোলানো কালো ব্যানারে সাদা কালিতে বড় বড় করে লেখা ছিল, ‘নো সিএএ’, ‘নো এনআরসি’, ‘নো এনপিআর’। মিছিলে ছিলেন চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, শশী পাঁজা, স্মিতা বক্সি, মালা সাহা, শিউলি সাহা, স্বপ্না দাস, চৈতালী চট্টোপাধ্যায়-সহ আরও অনেকে। দুপুর ২টো নাগাদ ওই মিছিল শুরু হয়। গড়িয়াহাট, রাসবিহারী, কালীঘাট হয়ে মিছিল শেষ হয় হাজরায়।
কেন্দ্রীয় মিছিল ছাড়া বিভিন্ন ওয়ার্ডেও মৌন মিছিল হয়। জেলাতেও মহিলা নেত্রী ও কর্মীরা মিছিল করেন। বিকেল ৪টে নাগাদ বিদ্যুৎমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় মিছিল শুরু করেন। সকলেই মুখে কালো কাপড় বেঁধে এসেছিলেন। মিছিল যায় ডোরিনা ক্রসিং পর্যন্ত। এনআরসি-সিএএ-এনপিআরের বিরুদ্ধে লাগাতার আন্দোলন চলবে বলে শোভনদেব জানান।
আবার রানি রাসমণি অ্যাভিনিউতে তৃণমূলের অবস্থান মঞ্চে ছিলেন প্রাক্তন মন্ত্রী বেচারাম মান্না। অবস্থানে বিভিন্ন জেলা থেকে খেতমজুররা আসেন। তাঁরা জানান, ‘কৃষকদের জন্য কেন্দ্রীয় সরকার কিছুই করেনি। বাজেটেও কৃষকদের কথা বলা হয়নি। আমাদের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কৃষকদের জন্য অনেক কাজ করেছেন। ২০১১–র পর রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে কৃষকদের সাহায্য করা হচ্ছে। কৃষকবন্ধু ও শস্য বিমা চালু করা হয়েছে। ৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত রানি রাসমণি অ্যাভিনিউতে অবস্থান চলবে।’
বেচারাম বলেন, ‘প্রতিদিনই একটি করে জেলার কৃষকরা অবস্থানে আসবেন। তাঁরা বক্তব্য রাখবেন। আমরা সকলেই এনআরসি-সিএএ-এনপিআরের বিরুদ্ধে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে আন্দোলন শুরু করেছেন, সে আন্দোলনকে আরও শক্তিশালী করতে হবে। বিভিন্ন জেলাতেও খেতমজুররা এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করছেন।
অন্যদিকে, গতকাল চন্দ্রিমা বলেন, ‘অবিলম্বে এনআরসি ও এনপিআর প্রত্যাহার করতে হবে। সিএএ-র মতো কালা কানুনকে বাতিল করতে হবে। এটাই আমাদের দাবি।’ এই আন্দোলনের অভিনবত্ব নিয়ে তিনি জানালেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পথ অবলম্বন করেন বলেই তাঁরা প্রতিবাদের এই ধরণটিকে বেছে নিয়েছেন। চন্দ্রিমার কথায়, ‘আমরা তরোয়াল বা বন্দুক নিয়ে পথে নামি না। আমাদের প্রতিবাদের অস্ত্র তাই ভাষা। একইসঙ্গে নিঃশব্দতাও।’