এর আগে দলিতদের দিয়ে জুতো চাটানোর অভিযোগ উঠেছিল গুজরাতের পুলিশকর্মীদের বিরুদ্ধে। এবার আদিবাসী এক কিশোরকে ডেকে এনে নিজের জুতো খুলিয়ে বিতর্কে জড়ালেন খোদ তামিলনাড়ু বনমন্ত্রী। যা নিয়ে ইতিমধ্যেই তীব্র নিন্দার ঝড় উঠেছে গোটা দেশজুড়ে। মন্ত্রীর বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছে ‘অপমানিত’ কিশোরও।
নিলগিরির মুদুমালাই টাইগার রিজার্ভে ৪৮ দিনের ক্যাম্প করেছে রাজ্যের বন দফতর। কুনকি হাতিদের স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য করা হয়েছে এই ক্যাম্প। সেই ক্যাম্প তদারকি করতে গিয়েছিলেন রাজ্যের বনমন্ত্রী দিনদিগাল সি শ্রীনিবাসন। ক্যাম্পে যাওয়ার পথেই এমন কীর্তি ঘটান তিনি। জানা গিয়েছে, সেখানে উপস্থিত ১৪ বছরের এক কিশোরকে ডেকে মন্ত্রী বলেন, ‘এই, এ দিকে ছুটে আয়।’ এরপর ছেলেটি তাঁর কাছে গেলে মন্ত্রী বলেন, ‘জুতোর বাকলটা খুলে দে।’ সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া এক ভিডিওতেই দেখা গিয়েছে মন্ত্রীর এই কীর্তি।
মন্ত্রীকে এমন কাণ্ড করতে দেখে ক্ষোভ ছড়িয়েছে নেটিজেনদের মধ্যে। শুরু হয়েছে তুমুল সমালোচনা। অনেকেই বলেছেন, দলিত ছেলেটি ঝুঁকে যখন জুতো খুলছিল, মুখে চওড়া হাসি ছিল মন্ত্রীর। বোঝাই যাচ্ছিল এই গোটা ব্যাপারটাতে তিনি যথেষ্ট মজা পেয়েছেন। অন্যদিকে, মন্ত্রীর বিরুদ্ধে মাসিনাগুড়ি থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে ছেলেটি। তাঁর অভিযোগ, সে দিনের ঘটনা সব সংবাদমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ায় সে অপমানিত বোধ করেছে।
চিঠিতে ছেলেটি লিখেছে, ‘আমাকে যিনি নির্দেশ দিয়েছিলেন তিনি একজন মন্ত্রী হওয়ায় তাঁর পাশে উপস্থিত পুলিশকর্তারাও ভয়ে তাঁকে কিছু বলেননি। তারা সবাই দাঁড়িয়ে দেখলেন, আমি মন্ত্রীর জুতো খুলে দিচ্ছি। মন্ত্রী ও সরকারের সবাই এটা খুব ভাল করে জানতেন যে সেখানে উপস্থিত সবাই আদিবাসী। আমি খুবই দুঃখ পেয়েছি। অপমানিত হয়েছি।’ তফশিলি জাতি ও উপজাতিদের সুরক্ষার আইনে অভিযুক্ত মন্ত্রীর বিরুদ্ধে যাতে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হয়, সেই আর্জি জানিয়েছে কিশোরটি।
তবে মন্ত্রীর দাবি, তিনি কোনও অন্যায় কাজই করেননি। সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেছেন, ‘আমি হেঁটে হাতির ক্যাম্পে যাচ্ছিলাম। হঠাত্ই আমায় বলা হল মন্দিরে যাওয়া হবে। আমার পায়ে জুতো ছিল। আমার পাশে থাকা সবাই এতটাই বড় ছিল যে তাঁদের আমার জুতো খুলে দিতে বলতে পারিনি। সামনেই একটা বাচ্চা ছেলে খেলছে দেখে তাকেই ডেকে বলি আমার জুতোটা খুলে দিতে।’