সম্প্রতি কম্যান্ডিং অফিসারের পদের জন্য দাবি জানিয়ে আবেদন করেছিলেন কয়েকজন মহিলা। সেই আবেদনের বিরোধিতা করে কেন্দ্র সরকার। কেন্দ্রের মতে, মহিলাদের স্থান এখনও রান্নাঘরেই। তাই এই নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল কেন্দ্র। দেশের যুদ্ধক্ষেত্রটা মহিলাদের জন্য ঠিক উপযুক্ত নয়। রণক্ষেত্রে মহিলাদের কম্যান্ডিং অফিসার হিসেবে মেনে নেওয়ার ব্যাপারে জওয়ানরাও ততটা প্রস্তুত নন। তাছাড়া মাতৃত্বকালীন ছুটি থেকে শুরু করে নানা অসুবিধা রয়েছে মহিলাদের। দেশের শীর্ষ আদালতকে এমনটাই জানাল কেন্দ্র।
প্রবীণ আইনজীবী আর বালাসুব্রহ্মণ্যম ও আইনজীবী নীলা গোখেল বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় ও বিচারপতি অজয় রাস্তোগির বেঞ্চকে জানান, কমব্যাট ফোর্সে মহিলাদের কম্যান্ডিং অফিসার হিসেবে নিয়োগ করলে সেনাবাহিনীর ধরনধারনই বদলে যাবে। মাতৃত্ব, সন্তানের লালনপালন নানা বিষয়ে একটা কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হবে। তাই কমব্যাট ফোর্সে মহিলাদের না নেওযাটাই যুক্তিসঙ্গত।
সরকারের তরফে সুপ্রিম কোর্টকে বলা হয়, ভারতীয় সেনাবাহিনীর যে কোনও র্যাঙ্কেই পুরুষদের আধিপত্য বেশি। এই সব জওয়ানরা সাধারণত গ্রামীন এলাকা থেকে আসেন। সংস্কারবদ্ধ মানসিকতার কারণে কোনও মহিলা কম্যান্ডিং অফিসারকে মেনে নেওয়া তাঁদের পক্ষে সম্ভব নয়। তাছাড়াও অন্য কারণ রয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকারের যুক্তি, সেনাবাহিনীর প্রশিক্ষণের সময় অথবার দুর্গম জায়গায় পোস্টিংয়ের সময় যে শারীরিক ও মানসিক দৃঢ়তার দরকার, সেটা মহিলারা পেরে ওঠেন না অনেক সময়েই।
কেন্দ্রের যুক্তি খারিজ করে দিয়ে বিপক্ষের আইনজীবী মীনাক্ষী লেখি ও ঐশ্বর্য ভাটি বলেন, সেনাবাহিনীতে মহিলা অফিসারদের বীরত্বকেই কুর্নিশ জানানো হয়। উদাহরণ হিসেবে আইনজীবী মীনাক্ষী লেখি বলেন, বালাকোট এয়ারস্ট্রাইকের পরে অভিনন্দন বর্তমান যখন মিগ বাইসন জেট নিয়ে পাকিস্তানের এফ-১৬ ফাইটার জেটকে ধাওয়া করছিলেন, তখন তাঁকে গাইড করেছিলেন ফ্লাইট কন্ট্রোলার মিনতি আগরওয়াল। শত্রুপক্ষের ফাইটার জেটের সমস্ত সিগন্যাল পৌঁছে দিয়েছিলেন উইং কম্যান্ডার অভিনন্দনের কাছে। মিনতিকে পরে ‘যুদ্ধ সেবা মেডেল’ নিয়ে সম্মানিত করা হয়। এর আগে কম্যান্ডিং অফিসার মিতালি মধুমিতাকে সাহসিকতার জন্য সেনা মেডেল দেওয়া হয়েছিল। কাবুলে ভারতীয় দূতাবাসের উপর জঙ্গি হানার কঠোর মোকাবিলা করেছিলেন তিনি।