চিনের ইউহান থেকে দেশে ফিরিয়ে আনার পর দিল্লীর কাছে মানেসরের নজরদারি কেন্দ্রে রাখা হয়েছিল ভারতীয় নাগরিকদের। এবার করোনাভাইরাসে আক্রান্ত সন্দেহে তাঁদের মধ্যে থেকে ৫ জনকে ভর্তি করানো হল সেনাবাহিনীর বেস হাসপাতালে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার প্রাথমিক লক্ষণগুলি ওই ৫ জনের শরীরে দেখা গিয়েছে। ইউহান থেকে ইতিমধ্যেই ৬০০-রও বেশি ভারতীয়কে এয়ার ইন্ডিয়ার দু’টি বিমানে দেশে ফিরিয়ে আনা হয়েছে।
অন্যদিকে, করোনাভাইরাস সংক্রমণকে কেরল সরকার ‘রাজ্যের বিপর্যয়’ বলে ঘোষণা করেছে। এর ফলে এই সংক্রমণের মোকাবিলায় বাড়তি অর্থ বরাদ্দ করতে পারবে কেরল সরকার। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে কেরল পুলিশও পাবে বাড়তি ক্ষমতা। সংক্রমণ মোকাবিলায় কেরলে গঠন করা করেছে আলাদা ‘টাস্ক ফোর্স’ও। সেই রাজ্যে সোমবার তিন জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। রক্তের নমুনা পরীক্ষায় তিন জনের শরীরেই করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়েছে।
সরকারি সূত্রের খবর, দিল্লীতে সেনাবাহিনীর বেস হাসপাতালে যে ৫ জনকে ভর্তি করানো হয়েছে, বিভিন্ন রকমের পরীক্ষার জন্য তাঁদের রক্তের নমুনা পাঠানো হয়েছে দিল্লীর ‘অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অফ মেডিক্যাল সায়েন্সেস (এইমস)-এ। এক জনের রক্তপরীক্ষার ফলাফল জানা গিয়েছে। তিনি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হননি। বাকি ৪ জনের রক্তপরীক্ষার ফলাফল এখনও জানা যায়নি।
এদিকে করোনাভাইরাস আটকাতে নতুন পদক্ষেপ নিয়ে ভারত সরকার। এবার চিন-সহ অন্য যে কোনও দেশের বিদেশি নাগরিকদের জন্যে ভারত সরকার বিবৃতি জারি করে জানাল, চিন থেকে এদেশে আসার জন্য ভিসা থাকলেও, তা এখন ‘বৈধ’ বলে গৃহীত হবে না। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ আটকাতে সরকার যে সর্বত ভাবে চেষ্টা করছে, তারই অন্যতম পদক্ষেপ এই সিদ্ধান্ত।
ইতিমধ্যেই করোনাভাইরাস নিয়ে ‘গ্লোবাল হেল্থ এমার্জেন্সি’ জারি করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)। চলতি সপ্তাহে চিনে করোনাভাইরাসের সংক্রমণে মৃত্যু হয়েছে আরও ৬৪ জনের, সব মিলিয়ে এখনও পর্যন্ত ৪২৫ জনের মৃত্যুর কথা স্বীকার করেছে চিন। চিনের সঙ্গে তাদের সীমান্ত বন্ধ করে দিয়েছে মঙ্গোলিয়া, রাশিয়া ও নেপাল। বিদেশি নাগরিকদের ঢোকা ইতিমধ্যেই বন্ধ করে দিয়েছে বেশ কয়েকটি দেশ। মনে করা হচ্ছে, এই পরিস্থিতিতে কোনও রকম কোনও ঝুঁকি নিতে চাইছে না ভারত। তাই চিন থেকে এ দেশে আসার জন্যে দেওয়া সমস্ত ভিসা আপাতত বাতিল করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে কেন্দ্রীয় বিদেশ মন্ত্রকেক তরফে।