বাংলার ক্ষমতায় এসে কৃষকদের উন্নতিতে ব্যাপক নজর দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মমতার জন্যই বাম আমলের তুলনায় এখন অনেক ভালো আছেন কৃষকরা। এসেছে একাধিক প্রকল্প। এবার জানা গেল ৮৮ হাজার কৃষককে মাসে হাজার টাকা করে বার্ধক্য ভাতা দিচ্ছে রাজ্য সরকার।
জীবদ্দশায় এবং মৃত্যুর পর কৃষকদের জোড়া সামাজিক সুরক্ষা যোজনায় গোটা দেশের মধ্যে নজর কাড়ল পশ্চিমবঙ্গ। ৬০ বছর বা তার বেশি বয়সের কর্মক্ষম কৃষকদের মাসে এক হাজার টাকা করে বার্ধক্যভাতা দেয় রাজ্য সরকার। ২০১৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত পাওয়া তথ্য অনুসারে এই মুহূর্তে রাজ্যের ৮৮ হাজার বৃদ্ধ কৃষক প্রতিমাসে হাজার টাকা করে পেনশন পাচ্ছেন। যদিও কৃষি দপ্তর সূত্রের দাবি, পেনশন খাতে রাজ্যের কোটা মোট এক লক্ষ। অর্থাৎ আরও ১২ হাজার কৃষককে এই বার্ধক্যকালীন আর্থিক সহায়তার আওতায় আনার সুযোগ রয়েছে। অন্যদিকে, রাজ্যে ১৮ থেকে ৬০ বছর বয়সি কোনও কৃষক প্রাকৃতিক নিয়মে কিংবা দুর্ঘটনায় মারা গেলে রাজ্য সরকার তাঁর পরিবারকে এককালীন দু’লক্ষ টাকা সাহায্য দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ২০১৯-’২০ অর্থবর্ষ থেকে এই মৃত্যুকালীন আর্থিক সাহায্য দেওয়া হচ্ছে। চলতি বছর রাজ্যের ৪ হাজার ৩১৬ জন কৃষকের পরিবার এই মৃত্যুকালীন সহায়তা পেয়েছে। যার জেরে রাজকোষ থেকে এখনও পর্যন্ত ৮৬ কোটি ৩২ লক্ষ টাকা খরচ হয়েছে।
অর্থ দফতর সূত্রে খবর, সর্বশেষ বাজেটের আগেই মৃত্যুকালীন ২ লক্ষ টাকা দেওয়ার নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। চলতি অর্থবর্ষে স্রেফ খরিফ মরশুমে রাজ্যে ৪৩১৬ জন চাষির মৃত্যু হয়েছে, তাঁদের পরিবার এই আর্থিক সাহায্যে পেয়েছে। একইসঙ্গে কৃষক পেনশনের ক্ষেত্রে আগে রাজ্যের সর্বোচ্চ কোটা ছিল মাত্র ৬৯ হাজার। কিন্তু ২৩টি জেলা থেকে অসংখ্য আবেদন আসতে শুরু করায় সেই কোটা বৃদ্ধির প্রয়োজন হয়ে পড়ে।
নবান্নের এক আমলার কথায়, বাংলার চাষিদের জন্য একাধিক সামাজিক সুরক্ষা যোজনা চালু করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যা দেশের অন্যান্য রাজ্যের কৃষকদের তুলনায় বাড়তি সুরক্ষা দেবে। ওই আমলার দাবি, রাজ্যের কৃষকদের মাসিক বার্ধক্যভাতার পরিমাণ আগে ছিল ৭৫০ টাকা। মূল্যবৃদ্ধির কথা মাথায় রেখে মুখ্যমন্ত্রী তা বাড়িয়ে এক হাজার টাকা করে দেন। বাংলার বহু খণ্ডিত জমির চরিত্র বিচার করে এক্ষেত্রে চাষিদের পাশাপাশি নথিভুক্ত বর্গাদারদেরও এই প্রকল্পে আসার সুযোগ দিয়েছেন তিনি। ওই আধিকারিকের কথায়, এক্ষেত্রে চাষিদের পাশাপাশি ভাগচাষিরাও এই বার্ধক্য ভাতা পাবেন। তবে এক্ষেত্রে তাঁকে জমির উপযুক্ত নথি সরকারের কাছে পেশ করতে হবে। কৃষকদের আবেদন গৃহীত হলে পেনশন বাবদ টাকা প্রতিমাসের ৭ তারিখে সংশ্লিষ্ট চাষির ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকা চলে যাবে। কৃষি দপ্তর সূত্রের দাবি, দেশের অন্যান্য রাজ্যের তুলনায় বাংলার কৃষকদের সার্বিক গড় আয় অনেকাংশে বৃদ্ধি পেয়েছে।