বাজেট পেশ করেই কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ প্রস্তাব দিয়েছেন যে, এলআইসি-র বড়সড় অংশীদারিত্ব বেচে দেওয়া হবে। একইসঙ্গে শেয়ার বিক্রি করা হবে আইডিবিআইয়েরও। এই ঘোষণার পর এলআইসির বেসরকারিকরণ যে প্রায় নিশ্চিত তা স্পষ্ট। সিদ্ধান্ত নিয়ে ব্যাপক বিতর্কের সৃষ্টি হলেও অর্থমন্ত্রকের আশা, এই এলআইসির অংশীদারিত্ব বিক্রি করে সরকার প্রায় ৭০,০০০ কোটি টাকা আয় করতে পারবে।
বাজেট পেশ করে অর্থমন্ত্রী জানান, আইপিও-র মাধ্যমে জীবনবিমায় সরকারি শেয়ার আংশিক বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এছাড়া শেয়ার বিক্রি করা হবে আইডিবিআইয়েরও। তবে এই সিদ্ধান্ত কার্যকর করতে গেলে প্রথমে মোদী সরকারকে আইন সংশোধন করতে হবে। দেশের বৃহত্তম বিমা সংস্থা ভারতীয় জীবন বিমা নিগমকে বেচতে হলে বদল আনতে হবে সংস্থার মূলধন পরিকাঠামোতেও। তবে এই সিদ্ধান্ত কার্যকর করতে মরিয়া সরকার, কারণ প্রায় ৭০,০০০ কোটি টাকার আয় দেখতে পারছে তারা। উল্লেখ্য, এলআইসি, আইডিবিআই ছাড়া বেসরকারিকরণের তালিকায় রয়েছে ভারত পেট্রোলিয়াম, এয়ার ইন্ডিয়ার মতো নামজাদা সংস্থাও।
অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, এই মুহূর্তে ভারতীয় বাজারের ৭৬.২৬ শতাংশ শেয়ার এলআইসি-র দখলে। বিগত অর্থবর্ষে দেশের বিভিন্ন জনমুখী প্রকল্পে ভারতীয় জীবন বিমা নিগম প্রায় ২ হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ করেছে। এমন একটি চূড়ান্ত লাভজনক সংস্থার আইপিও সরকার বাজারে ছাড়লে তা কেনার জন্য লোকের অভাব হবে না বলেই ধারণা তাদের। প্রসঙ্গত, ২০১৯ আর্থিক বছরে প্রিমিয়াম বাবদ এলআইসি-র আয় হয়েছিল প্রায় ৩ লক্ষ ৩৭ হাজার কোটি টাকা।
এদিকে, কেন্দ্রীয় সরকারের এই সিদ্ধান্তে প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ বিরোধীরা। বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, ‘প্রাচীন এবং গর্বের সরকারি সংস্থাগুলিকে এইভাবে ধ্বংস করার সিদ্ধান্ত দেখে আমি হতবাক এবং স্তম্ভিত। এই সিদ্ধান্তের একদিকে মানে হল সুরক্ষার বিনাশ। তাহলে কি এটা একটা যুগের অবসান হতে চলেছে?’ এই প্রশ্ন তুলেই কেন্দ্রীয় সরকারের এলআইসি নিয়ে সিদ্ধান্তকে তুলোধনা করেছেন তিনি।