নির্বাচনী বন্ড নিয়ে বিভিন্ন আরটিআই-এর উত্তরে অসত্য তথ্য দিয়েছে স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া বা এসবিআই। এমনই চাঞ্চল্যকর অভিযোগ আনল হাফিংটন পোস্ট নিউজ পোর্টালের এক প্রতিবেদনে।
২৯ জানুয়ারি হাফিংটন পোস্টে প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, বিতর্কিত নির্বাচনী বন্ড নিয়ে বিভিন্ন আরটিআই-এর প্রতিক্রিয়ায় ভুল তথ্য দিয়েছে এসবিআই। কিছু ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ মিথ্যে উত্তরও দেওয়া হয়েছে।
নির্বাচনী বন্ডের মাধ্যমে নাম-পরিচয়বিহীন কর্পোরেট অনুদানের মাধ্যমে ব্যাপক দুর্নীতি হয়েছে এবং তাতে দেশের শাসক দলই জড়িত, এমন গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। যা নিয়ে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা অ্যাসোসিয়েশন ফর ডেমোক্র্যাটিক রিফর্মস (এডিআর) সুপ্রিম কোর্টে মামলাও দায়ের করেছে। এই পরিস্থিতিতে এসবিআই-এর বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ তুলল ইংরেজি সংবাদমাধ্যম হাফিংটন পোস্ট। তাদের দাবি, কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রকের এই প্রকল্প সম্পর্কে তাদের সঙ্গে নিয়মিত তথ্য আদান-প্রদান সত্ত্বেও, বিভিন্ন তথ্যের অধিকার আইন মামলার আবেদনে অসত্য তথ্য দিয়েছে এসবিআই।
অভিযোগ, প্রত্যেক বন্ডের গোপন নম্বর দিয়ে এসবিআই শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সমস্ত লেনদেন চাইলেই তল্লাশি করতে পারে। কিন্তু তা করা হয়নি। শুধু তাই নয়, কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রকের নির্দেশে অনেক মেয়াদ ফুরিয়ে যাওয়া নির্বাচনী বন্ডকেও এসবিআই গ্রহণ করেছে। এমনকী বন্ড সম্পর্কে প্রথম আরটিআই-এর উত্তর দেওয়ার আগে ‘অবৈধভাবে’ কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রকের অনুমোদন চায় এসবিআই। কিন্তু আরটিআই আইনে স্পষ্ট উল্লেখ আছে, এসবিআই একটি স্বাধীন সরকারি সংস্থা। তাদের কেন্দ্রীয় সরকারের অনুমতির কোনও প্রয়োজন পড়ে না।
হাফিংটন পোস্টের আরও দাবি, এসবিআই প্রথমে অসত্য জবাব দেয় সমাজকর্মী ভেঙ্কটেশ নায়েকের এক আরটিআই-এ। ভেঙ্কটেশ জানতে চেয়েছিলেন, ২০১৮-১৯ সালের মধ্যে বিভিন্ন অঙ্কের কতগুলি নির্বাচনী বন্ড বিক্রি হয়েছে? উত্তরে এসবিআই জানায়, এই তথ্য আইনমাফিক দেওয়া সম্ভব নয়। যা আদৌ ঠিক নয় বলে অভিযোগ করা হয়েছে সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদনে। ওই আরটিআইয়ে নায়েক জানতে চেয়েছিলেন, তারিখ অনুযায়ী এসবিআই-র প্রতিটি শাখায় ২০১৮ সালের মার্চের পর কতগুলি নির্বাচনী বন্ড বিক্রি হয়েছে এবং তার লেনদেন সম্পর্কিত আরও কিছু তথ্য। এর জবাবে এসবিআই দাবি করে, প্রতিটি শাখা থেকে হেড অফিস পুঙ্খানুপুঙ্খ তথ্য জোগাড় করতে পারেনি। তা করলে ব্যাঙ্কের শাখাগুলির আর্থিক খাত সামঞ্জস্যহীন হয়ে পড়বে। এটিও অসত্য তথ্য বলে অভিযোগ করা হয়েছে। কারণ, দেশজুড়ে এসবিআই-র ২৪ হাজার শাখা থাকলেও নির্বাচনী বন্ড কেবল ৩২ টি শাখা থেকে বিক্রি করা যায়। তাই এ তথ্য জোগাড় করলে ব্যাঙ্কের কোষাগারের হিসেব সামঞ্জস্যহীন হয়ে যাবে, এই যুক্তি মানা যায় না। এরপরও একাধিক আরটিআই প্রশ্নের জবাব এসবিআই কর্তৃপক্ষ সন্তর্পণে এড়িয়ে গিয়েছে বলে দাবি। হাফিংটন পোস্টের এর তরফে এ নিয়ে একটি প্রশ্নমালা পাঠানো হয়েছে এসবিআইকে। যার উত্তরও এখনও মেলেনি বলে অভিযোগ।