‘সবকা সাথ, সবকা বিকাশ’ – ২০১৯ লোকসভা ভোটের আগে এই ছিল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীদের স্লোগান। যেমন ২০১৪-র লোকসভা ভোটের আগে ‘আচ্ছে দিন’-এর স্বপ্ন ফেরি করেছিলেন তিনি। তবে মোদী জমানায় দেশের কৃষকরা আচ্ছে দিনের মুখ তো দেখেইনি, বরং এবার তাদের বিকাশও থমকে দিতে চাইছে মোদী সরকার। গত বছর ফেব্রুয়ারি মাসে অন্তর্বতী বাজেটে দেশের কৃষকদের জন্য বছরে ৬,০০০ টাকার যে আয় সহায়তা প্রকল্প ঘোষণা করেছিলেন পীযূষ গোয়েল, সেই প্রধানমন্ত্রী কিষান সম্মান নিধি (পিএম-কিষান) প্রকল্পে বাজেট বরাদ্দ শনিবার কমাতে পারেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন।
২০১৯-২০ অর্থবছরের জন্য ওই প্রকল্পে ৭৫,০০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছিলেন পীযূষ গোয়েল। প্রকল্পের লক্ষ্য ছিল, ২ হেক্টরের কম জমির মালিক এমন কৃষকদের হাতে বছরে তিন দফায় মোট ৬,০০০ টাকা সরাসরি পৌঁছে দেবে কেন্দ্র। কিন্তু, বাংলা-সহ অনেক রাজ্য এই প্রকল্পে যোগ দিতে না চাওয়ায় এবং বিহার, মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান, অন্ধ্রপ্রদেশ, কর্নাটকের মতো বহু রাজ্য গা-ছাড়া ভাবে উপযুক্ত কৃষকদের সনাক্তকরণের প্রক্রিয়া চালিয়ে যাওয়ায় মাত্র ৭.৫ কোটি কৃষককেই এই প্রকল্পে নথিভুক্ত করা গিয়েছে যাদের আধার যাচাই হয়েছে। সরকারের লক্ষ্য ছিল, পিএম-কিষান প্রকল্পের সুবিধা দেশের অন্তত ১৪.৫ কোটি কৃষকের কাছে পৌঁছে দেওয়ার।
পিএম-কিষান প্রকল্পে আশানুরূপ সাড়া না মেলায় কেন্দ্রীয় কৃষি মন্ত্রক ৭৫,০০০ কোটি টাকার বাজেট বরাদ্দে মধ্যে মাত্র ৪৪,০০০ কোটি টাকাই বিলি করতে পেরেছে। ফলে, ২০২০-২১ অর্থবছরে ওই প্রকল্পের জন্য কৃষি মন্ত্রক ৬০,০০০ কোটি টাকার বাজেট বরাদ্দ – ২০১৯-২০ অর্থবর্ষের তুলনায় ২০ শতাংশ কম চেয়েছে অর্থ মন্ত্রকের কাছে। দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় এসে মোদী সরকার অবশ্য ২ হেক্টর জমির সীমা তুলে দেয় যাতে দেশের সমস্ত কৃষক পরিবারই এই প্রকল্পের সুবিধা নিতে পারে।
কিন্তু, ওই টাকা পেতে হলে সংশ্লিষ্ট কৃষককে উপযুক্ত দলিল-দস্তাবেজ দেখিয়ে নথিভুক্ত হতে হবে। যেমন, তাঁর জমির মালিকানার সঠিক কাগজপত্র থাকতে হবে, ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে আধার যোগ থাকতে হবে। এ যাবৎ নথিভুক্ত ৯.৫ কোটি কৃষকের মধ্যে ২ কোটি কৃষকেরই ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে আধার যাচাই করানো নেই। পিএম-কিষান প্রকল্পের পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনা ও প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনাতেও মোদী সরকার ব্যয় বরাদ্দ কমাতে পারেন বলে খবর।