সিএএ-এনআরসি নিয়ে মতভেদ প্রকাশ্যে এসেছিল কিছু দিন আগেই। সংসদে সংশোধিত নাগরিকত্ব বিলকে জেডিইউ সমর্থন করা এবং দিল্লীর নির্বাচনের জন্য বিজেপির সঙ্গে হাত মেলানোয় দলের ভিতরে এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রশ্ন তুলে দলের অস্বস্তি বাড়িয়ে দিয়েছিলেন সহ সভাপতি, ভোট কুশলী প্রশান্ত কিশোর এবং সাধারণ সম্পাদক পবন বর্মা। যার জেরে এবার দুজনকেই বহিষ্কার করল জেডিইউ। মূলত সিএএ-র বিরোধিতা করারই খেসারত দিতে হল পিকে ও পবনকে। এমনটাই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
প্রসঙ্গত, গত কয়েকদিন ধরেই দলের সঙ্গে দূরত্ব বাড়ছিল প্রশান্ত কিশোরের। প্রকাশ্যেই নীতিশ কুমারের নেতৃত্বের সমালোচনায় মুখর হয়েছিলেন তিনি। সিএএ সমর্থন নিয়ে নীতিশ বাহিনীকে কার্যত তুলোধনা করেছিলেন পিকে। একই পথে হেঁটেছিলেন পবন বর্মাও। তবে জেডিইউ থেকে বহিষ্কৃত হওয়ার পরও দমেননি পিকে। টুইটারে নীতিশকে ‘খোঁচা’ দিয়ে তিনি লেখেন, ‘ধন্যবাদ নীতীশ কুমার। বিহারের মুখ্যমন্ত্রীর কুর্সি ধরে রাখার জন্য আমার তরফ থেকে অনেক শুভেচ্ছা। ভগবান আপনার মঙ্গল করুক।’
উল্লেখ্য, মঙ্গলবারই দলের দু’নম্বর নেতাকে কার্যত দরজা দেখিয়ে দিয়েছিলেন নীতিশ। সেদিন পাটনায় জেডিইউ-এর সাংসদ, বিধায়ক ও কর্মকর্তাদের নিয়ে বৈঠকের পর প্রশান্ত কিশোর সম্পর্কে তিনি বলেছিলেন, ‘রহেগা তো ঠিক। না রহেগা তো ঠিক।’ মানে প্রশান্ত দলে থাকলেও ভাল, না থাকলেও ঠিক আছে। আসলে দলের সহ সভাপতি প্রশান্ত টুইটারে সমানে সরব সিএএ-এনসিআর-এর বিরুদ্ধে। তাই বিজেপি নির্ভরতার প্রশ্নে চাপে পড়ে নীতিশ দেখানোর চেষ্টা করেন, বিজেপির কথাতেই প্রশান্তকে তিনি দলে নিয়েছেন! তাঁর দাবি, ’প্রশান্ত কীভাবে আমাদের দলে এল জানেন? অমিত শাহ ওঁকে নিতে বলেছিলেন।’
জবাবে নীতিশকে মিথ্যেবাদী আখ্যা দেন প্রশান্ত। টুইটারে পিকে বলেন, ‘আপনার এতদূর অধঃপতন হল যে কেন, কীভাবে আমাকে জেডিইউতে যোগ দেওয়ালেন, তা নিয়ে মিথ্যে বলতে হল, যাতে দেখানো যায়, আমিও আপনার মতোই!’ একইসঙ্গে তাঁর খোঁচা, ‘আর আপনি যদি সত্যি বলেও থাকেন, কে বিশ্বাস করবে যে অমিত শাহের সুপারিশ না মানার সাহস আপনার এখনও আছে?’
অন্যদিকে, সিএএ, দিল্লীর নির্বাচন ইত্যাদি ইস্যুতে বিজেপির সঙ্গে নীতিশের আপোস নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন মুখপাত্র পবন বর্মা। তাঁকে বহিষ্কৃত করায় ক্ষোভ উগড়ে দিয়ে তিনি বলেন, ‘আমাকে মুক্ত করে দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ। আপনাকে আর আপনার রাজনীতিকে সমর্থন করতে পারছিলাম না। আপনি যে ভাবেই হোক মুখ্যমন্ত্রীর কুর্সি বাঁচাতে ব্যস্ত। শুভেচ্ছা রইল।’ পিকে ও বর্মাকে বহিষ্কারের পর এখন রাজনৈতিক মহলে এই প্রশ্নই ঘুরপাক করছে যে, এবার কি তাহলে ভাঙনের মুখে জেডিইউ?