বিজেপির বিভাজনের রাজনীতি এখন ক্রমশই প্রকাশ্যে চলে এসেছে। এরই মধ্যে শোনা যাচ্ছে জাতি ও সম্প্রদায়ভিত্তিক পরিসংখ্যান পেতে এবার এনপিআর এবং আদমসুমারির সাহায্য নিতে চলেছে মোদী সরকার। সূত্রের খবর, পরিকল্পনামাফিক সংসদের আসন্ন বাজেট অধিবেশনেই জাতিভিত্তিক জনগণনার জন্য সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে তৈরি হচ্ছে কয়েকটি শরিক দল। ইতিমধ্যেই সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের প্রয়োগবিধি তৈরির কাজ চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছেছে। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল, জেলাস্তরে সংশ্লিষ্ট জেলাশাসকের দফতরে নাগরিকত্বের আবেদন জানানো যাবে। তবে, আবেদনপত্রের সঙ্গে জমা দিতে হবে ধর্মীয় প্রমাণপত্রের প্রতিলিপি। এ ব্যাপারে বিজ্ঞপ্তি জারি হবে শিগগিরই। আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারি নাগাদ নাগরিকত্বের আবেদনপত্র গ্রহণ প্রক্রিয়া শুরু হবে।
২০১১ সালে মনমোহন সিংয়ের সরকার গোটা দেশে ‘আর্থসামাজিক এবং জাতিগত জনগণনা’ করলেও, জাতিগত পরিসংখ্যান প্রকাশিত হয়নি। এবার তা–ই করতে চাইছে মোদী সরকার। এক্ষেত্রে সংসদে সিদ্ধান্ত নিতে বিজেপি পাশে চাইছে তাদের শরিক ও সহযোগী দলগুলিকে। বিজেপি সাংসদদের পাশাপাশি এই দাবি তুলতে পারেন বিজেডি সাংসদরা। রয়েছে শিরোমণি অকালি দল-সহ আরও কয়েকটি ঘনিষ্ঠ দল। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের এক উচ্চপদস্থ আধিকারিকের দাবি, জাতি–সম্প্রদায় ভিত্তিক জনগণনার পরিসংখ্যান জনগণের স্বার্থে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজে ব্যবহার করতে চায় সরকার। তবে, পূর্বের মতো পরিসংখ্যান গোপন রাখা হবে, না কি প্রকাশ করা হবে, তা সরকারের বিবেচ্য।
বিশেষজ্ঞ মহল মনে করছে, একদিকে জাতি ও সম্প্রদায়–ভিত্তিক জনগণনার প্রস্তুতি, অন্যদিকে নাগরিকত্বে ধর্মাচরণের প্রমাণপত্র, এই দুই নিয়ে আবারও উত্তাল হতে চলেছে দেশের রাজনীতি। ইতিমধ্যেই সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন প্রত্যাহার করার দাবি সংবলিত প্রস্তাব পাশ হয়েছে বাংলা, কেরালা, পাঞ্জাব, রাজস্থান বিধানসভায়। তেলেঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী কে চন্দ্রশেখর রাও-ও বিধানসভায় সিএএ বাতিলের প্রস্তাব পাশ করতে চলেছেন। এই আবহে নাগরিকত্ব আইনের প্রয়োগবিধিতে ধর্মীয় প্রমাণ পেশের উল্লেখ করা হলে, দেশের রাজনীতিতে তা নতুন মোড় আনতে পারে। পাশাপাশি জনগণনার মাধ্যমে জাতি ও সম্প্রদায়–ভিত্তিক পরিসংখ্যান সংগ্রহ করে তা প্রকাশ করা হলে, তার বিরোধিতা হতে পারে।