বলাগড়ের জিরাটের ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী অন্বেষা মণ্ডলকে মুক্তিপণের জন্য অপহরণ করে খুন করা হয় ২০১৪ সালে। মেরে ফেলার পরে করা হয় গণধর্ষণ। এই ঘটনায় অভিযুক্ত হিসেবে গ্রেফতার হয় তিন জন। গৌরব মণ্ডল ওরফে শানু, কৌশিক মালিক ও স্বরূপ মজুমদার। ধৃতদের বিরুদ্ধে ৩৬৩, ৩৬৪/এ, ৩৭৬(২),৩০২, ২০১,৩৪ ও ৬ পকসো ধারায় মামলা রুজু হয়। ২০১৪ সালের ১২ ডিসেম্বর সন্ধেবেলায় টিউশন পড়ে সাইকেল নিয়ে ফেরার পথে অপহৃত হয় ওই ছাত্রী। সেই সময় বাড়ি থেকে কিছুটা দূরে গৌরব মণ্ডল, কৌশিক মালিক এবং এক নাবালক তাকে জোর করে একটি জঙ্গলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। নাবালিকা চিৎকার করলে তাকে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়। এই মামলার বিশেষ আইনজীবী সুব্রত গুছাইত জানান, আসামীরা ঠান্ডা মাথায় মৃতদেহ জঙ্গলে রেখে একটি হোটেলে গিয়ে খাওয়া-দাওয়া করে।
মেয়ে বাড়ি না ফেরায় নাবালিকার বাবা ও অন্যান্য প্রতিবেশীরা খোঁজাখুঁজি শুরু করেন আশপাশে। এর পরেই তিন লাখ টাকা মুক্তিপণ চেয়ে ছাত্রীর বাবা চিন্ময় মণ্ডলের কাছে ফোন আসে। এরপর খুনের সমস্ত প্রমাণ লোপাটের জন্য নাবালিকার দেহ ও তার সাইকেলটি একটি বাইকে চাপিয়ে নদীর চরে নিয়ে যায়। এমনকী ওই নাবালিকার দেহের সঙ্গে উদ্দাম যৌনতায় মেতে ওঠে ওই তিনজন। এরপর নাবালিকার দুই পা কোদাল দিয়ে কেটে গঙ্গার পাড়ে গর্ত খুঁড়ে পুঁতে দেয়। ঘটনার পরের দিন ১৩ ডিসেম্বর নিজের মেয়েকে ফিরে পাওয়ার জন্য বলাগড় থানায় একটি অপহরণের অভিযোগ দায়ের করেন নাবালিকার বাবা।
তদন্তে নেমে বলাগড় থানার তদন্তকারী অফিসার এস আই সোমনাথ দে তিনজনকে গ্রেপ্তার করে। দোষী নাবালক ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে গোপন জবানবন্দি দেয়। অপরাধ স্বীকার করে নেয় সে। আপাতত জুভেনাইল কোর্টে বিচার চলছে তার। এই মামলায় মোট ৩৩ জনের সাক্ষ্য গ্রহণের পর গত সপ্তাহে চুঁচুড়া আদালতের অ্যাডিশন্যাল ডিস্ট্রিক্ট অ্যান্ড সেশন জাজ মানস রঞ্জন সান্যাল বাকি দুই আসামী গৌরব মণ্ডল ও কৌশিক মালিককে ভারতীয় দন্ডবিধির ৩৬৩, ৩৬৪এ, ৩০২ ধারায় দোষী সাব্যস্ত করেন। সোমবার ২ দোষীর ফাঁসির সাজার নির্দেশ দিয়েছেন।