আজ, ৭১ তম সাধারণতন্ত্র দিবসে কলকাতার ডায়োসিস গির্জাগুলির রবিবাসরীয় প্রার্থনার পর এই অভূতপূর্ব ঘটনা ঘটতে চলেছে। পবিত্র বাইবেল পাঠের পরেই ভারতীয় সংবিধানের প্রস্তাবনা উচ্চারিত হবে শতকণ্ঠে। চার্চ-প্রাঙ্গণে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের পর ‘উই দ্য পিপল অফ ইন্ডিয়া’ পাঠ করার পরিকল্পনাও রয়েছে অনেকের। আর তারপরই বেলা ১২টায় শহরের উত্তর থেকে দক্ষিণে দীর্ঘ মানববন্ধন গড়ে সেখানেও সংবিধান রক্ষার শপথ নেওয়া হবে। তাতে যাজকরা তো থাকবেনই, অনেক সাধারণ মানুষকেও সেখানে অংশগ্রহণের আবেদন করা হয়েছে।
কলকাতার আর্চ বিশপ টমাস ডিসুজা এক লিখিত বিবৃতিতে ফাদারদের কাছে এই উদ্যোগ গ্রহণের অনুরোধ জানিয়েছেন। সেখানে বলা হয়েছে, দক্ষিণে গোলপার্ক থেকে উত্তরে শ্যামবাজার নেতাজি মূর্তির পাদদেশ পর্যন্ত এই মানববন্ধন গড়া হবে মিনিট দশেকের জন্য। আর্চ বিশপ তাঁর বিবৃতিতে অনুরোধ করেছেন যাতে যাজক এবং সমস্ত ধর্মপ্রাণ মানুষ সেই মানব বন্ধনে অংশগ্রহণ করেন। জানা গেছে, ভারতীয় সংবিধানের ঐতিহ্য এবং মহিমা তুলে ধরতেই ওই মানববন্ধন গড়া হবে।
সিএএ এবং এনআরসি-র প্রতিবাদে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মতো খ্রিষ্টানরাও পথে নেমেছেন। ইতিমধ্যেই পাদ্রিদের মিছিল হয়েছে কলকাতায়। সিএএ বিরোধী প্রতিবাদের আবহে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সংবিধানের প্রস্তাবনা পাঠও হয়েছে। কিন্তু প্রজাতন্ত্র দিবসে গির্জার প্রার্থনার পরে সংবিধানের মহিমা পাঠ করার এই উদ্যোগ নিঃসন্দেহে অভিনব এবং তাৎপর্যপূর্ণ। কলকাতার অন্তত ৩৫টি চার্চে এই উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।
আর্চ ডায়োসিস অফ কলকাতার রিকার জেনারেল ডমিনিক গোমস শনিবার সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘আমরা সকলেই দেশের সংবিধান দ্বারা পরিচালিত। সংবিধানের ঊর্ধ্বে আমরা কেউ নই। সেই কারণেই আমরা সংবিধানের প্রস্তাবনার বহু কপি ছাপিয়েছি। চার্চে প্রার্থনা হয়ে যাওয়ার পর তা সমবেত জনতার মাঝে বিলি করা হবে এবং পাঠ করা হবে। শুধু প্রজাতন্ত্র দিবসেই নয়, এই অনুশীলন আমরা মাঝেমধ্যেই করব।’
কোন পথে গড়ে উঠবে এই মানববন্ধন? জানা গেছে, শহরের মোট পনেরোটি জায়গায় জমায়েতের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। গোলপার্ক, গড়িয়াহাট মোড়, বালিগঞ্জ ফাঁড়ি থেকে পার্ক সার্কাস সেভেন পয়েন্ট হয়ে এজেসি বোস রোড ধরে মৌলালি, শিয়ালদহ, রাজাবাজার, মানিকতলা, শ্যামবাজার পাঁচ মাথার মোড়। এই সুদীর্ঘ পথেই গড়ে উঠবে এই মানব বন্ধন।