দোলের দিনই বিশ্বভারতীতে বসন্ত উৎসব পালন করার অনুরোধ জানান রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। সেই নিয়েই এবার মুখ খুললেন বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। শুক্রবার জরুরি বৈঠকের পর বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ জানায়, প্রশাসনিক দায়ভার রাজ্য সরকার নিলে দোলের দিনই বসন্ত উৎসব করতে রাজি বিশ্বভারতী। বৈঠকের এই সিদ্ধান্ত রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রীকে চিঠি দিয়ে জানিয়েও দিলেন বিশ্বভারতীর ভারপ্রাপ্ত কর্মসচিব।
বিশ্বভারতীর ছ’সদস্যের একটি কমিটি আগামী ১০ ফেব্রুয়ারির পর শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনার জন্য দেখা করবে। বিশ্বভারতীর আবেদন অনুযায়ী, বসন্ত উৎসবে কোনও ঝামেলা বা দুর্ঘটনা ঘটলে তার দায়ভার নিতে হবে রাজ্য সরকারকে। প্রসঙ্গত, বিশ্বভারতীর কোনও অনুষ্ঠানের প্রশাসনিক দায়ভার সম্পূর্ণভাবে রাজ্য সরকারকে নেওয়ার আবেদন এই প্রথম।
২০১৯ সালে বসন্ত উৎসবে প্রায় তিন লক্ষ মানুষের সমাগম ঘিরে শান্তিনিকেতনে বিশৃঙ্খলা ছড়ায়। বহু রাস্তা ভিড়ের চাপে কার্যত বন্ধ হয়ে যায়। পদপিষ্ঠ হওয়ার মতো পরিস্থিতিও তৈরি হয়। সেই কথা মাথায় রেখেই গত ৭ জানুয়ারির বৈঠকে বসন্ত উৎসবের দিন পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নেয় বিশ্বভারতী। ঠিক হয়, ১৮ ফেব্রুয়ারি বসন্ত বন্দনা এবং ১৯ তারিখে বসন্ত উৎসব হবে। এর পরই রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় জানিয়ে দেন, তিনি উপাচার্যের সঙ্গে কথা বলেছেন। উপাচার্যকে অনুরোধ করেছেন বসন্ত উৎসবের দিন পরিবর্তন না করতে। দোলের দিনই বসন্ত উৎসব করার জন্য রাজ্য সরকারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে উৎসবের প্রশাসনিক দায়ভার সম্পূর্ণ রাজ্য সরকারের উপর চাপিয়ে দিতে চাইছে বিশ্বভারতী।
এই বিষয়ে বিশ্বভারতীর ভারপ্রাপ্ত জনসংযোগ আধিকারিক অনির্বাণ সরকার বলেন, “প্রশাসনিক দায়ভার রাজ্য সরকার নিলে দোলের দিন বসন্ত উৎসব করতে রাজি বিশ্বভারতী। রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রীকে চিঠি দিয়ে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে এই সিদ্ধান্ত।”
শুক্রবার বিশ্বভারতীর কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারে একটি জরুরি বৈঠক ডাকা হয়। সেখানে উপস্থিত ছিলেন, উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী, কর্মসমিতিতে রাষ্ট্রপতির প্রতিনিধি সুশোভন বন্দ্যোপাধ্যায়, প্রধানমন্ত্রীর প্রতিনিধি দুলালচন্দ্র ঘোষ, মঞ্জুমোহন মুখোপাধ্যায়, কর্মসচিব, বিভিন্ন ভবন অধ্যক্ষ-সহ অন্যান্যরা। বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, বসন্ত উৎসবের প্রশাসনিক দায়ভার সম্পূর্ণভাবে রাজ্যসরকারকে নিতে হবে। পুলিশি ব্যবস্থা তাদের করতে হবে। এমনকী অনুষ্ঠানের সময় কোনও দুর্ঘটনা ঘটলে তার দায়ভারও নিতে হবে রাজ্য সরকারকে।