কেন্দ্রের দান না নিয়ে রাজ্যের নিজস্ব তহবিল থেকে বাংলার চাষিদের পাশে দাঁড়াতে গত অর্থবর্ষে ‘কৃষক বন্ধু’ প্রকল্প চালু করেছিলেন তিনি। কেন্দ্রের প্রকল্পে সুবিধাভোগীর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে সরাসরি টাকা চলে যায়। কিন্তু মোদি জমানায় অনলাইন ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থা ঘিরে একাধিক আশঙ্কা তৈরি হওয়ায় চাষিদের হকের পাওনা দিতে বাড়তি সতর্ক হন মমতা। তাঁরই নির্দেশে চেকের মাধ্যমে বাংলার কৃষকদের আর্থিক সহায়তা তুলে দেওয়া হচ্ছে। এবার এই প্রকল্পে নজির গড়ল বাংলা। চলতি অর্থবর্ষে ৩৭ লক্ষ চাষিকে ৪৮৬ কোটি টাকার আর্থিক সাহায্য রাজ্যের।
গত অর্থবর্ষে অর্থাৎ ২০১৮-’১৯ সালে এই প্রকল্পে সুবিধাভোগী কৃষকের সংখ্যা ছিল ৩৬ লক্ষ ৫৮ হাজার। চলতি অর্থবর্ষে অর্থাৎ ২০১৯-’২০ সালে তা বেড়ে হতে চলেছে ৪১ লক্ষের বেশি। যার মধ্যে ৩৭ লক্ষ চাষিকে ইতিমধ্যেই চেক প্রদান করা হয়েছে। রাজ্য সরকার নিজস্ব তহবিল থেকে এখনও পর্যন্ত এই খাতে ৪৮৬ কোটি ৩২ লক্ষ টাকা খরচ করেছে। চলতি অর্থবর্ষ শেষ হতে দু’মাসেরও বেশি সময় হাতে রয়েছে।
নবান্নের আমলাদের বক্তব্য, সুবিধাভোগীর সংখ্যা এবং সংশ্লিষ্ট খাতে খরচ—দু’টি ক্ষেত্রেই গত বছরের রেকর্ডকে ছাপিয়ে যাব এবার। প্রসঙ্গত, গত অর্থবর্ষে কৃষক বন্ধু প্রকল্পে সাড়ে ৩৬ লক্ষ কৃষকের হাতে মোট ৫৫৮ কোটি টাকা তুলে দিয়েছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার।
সূত্রের দাবি, নিয়ম-কানুনের ক্ষেত্রে নবান্ন কৃষক বন্ধু প্রকল্পে যতটা সম্ভব শিথিলতা দেখিয়েছে। যাতে সংশ্লিষ্ট প্রকল্পের অধীনে সর্বাধিক চাষিদের অন্তর্ভুক্ত করা যায়। রাজ্য সরকারের এই প্রকল্পে ন্যূনতম দু’হাজার, সর্বাধিক পাঁচ হাজার টাকা পেতে পারেন যোগ্য কৃষকরা। এক্ষেত্রে এক একর বা তার কম জমি থাকা চাষিরা খরিফ এবং রবি মরশুমে এক হাজার করে মোট দু’হাজার টাকা পান। একইভাবে দু’ একর পর্যন্ত জমি থাকা কৃষকরা চাষের দু’টি মরশুমে আড়াই হাজার করে মোট পাঁচ হাজার টাকা পান। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে কেবল চাষযোগ্য জমির মালিক কৃষকদের পাশাপাশি নথিভুক্ত ভাগচাষিরাও এই আর্থিক সহায়তা পাচ্ছেন।