কথায় বলে, নানা মুনির নানা মত। ঠিক একই কাণ্ডই এখন ঘটছে গেরুয়া শিবিরের অন্দরে। যেখানে এনআরসি-সিএএ নিয়ে এখন নানা সুর গাইছেন নেতা-মন্ত্রীরা। স্পষ্ট করে বলতে গেলে, রাজ্য বিজেপিতে এখন ঘোর দ্বন্দ্ব এনআরসি নিয়ে। একপক্ষ বলছে এনআরসি হবে, অন্যপক্ষ বলছে রাজ্যে এনআরসি হবে না। দুই বিপরীতধর্মী প্রচার চলছে চুটিয়ে। ঠিক যেমন অমিত শাহ এক কথা বলছেন, উল্টো কথা নরেন্দ্র মোদীর। আর এখানে দিলীপের মুখে যে কথা বিরুদ্ধ কথা মুকুলের মুখে। দিলীপ ঘোষের সাফ কথা, আসামে যেমন হয়েছে, বাংলাতেও তেমনি এনআরসি করা হবে। রাজ্যে এক কোটি মুসলিম অনুপ্রবেশকারী রয়েছে। তাদের সবাইকে দেশছাড়া করা হবে। অন্যদিকে, দিলীপের কথার বিরুদ্ধাচারণ করে মুকুল রায় আবার সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, রাজ্যে এনআরসি হচ্ছে না।
মুকুল বলেছেন, স্পষ্টভাবেই বলছি, রাজ্যে এনআরসি হচ্ছে না। যাঁরা প্রচার করছেন এনআরসি হবে, তাঁরা ভুল বলছেন। ভ্রান্ত প্রচার চালাচ্ছেন, অন্যায় করছেন। তাঁরা বাংলার মানুষের সঙ্গে তথা ভারতের মানুষের সঙ্গে তঞ্চকতা করছেন। বাংলায় এনআরসির কোনও আলোচনাই হয়নি। একই কথা বলেছিলেন খোদ মোদীও। তিনি জানিয়েছিলেন, এনআরসি নিয়ে কোনও আলোচনাই হয়নি। যদিও তারপরও রাজ্যের কোনও কোনও নেতা এনআরসি চাই, এনআরসি হবে বলে তুমুল প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন। রাজ্যের বিজেপি নেতারা আগেও এনআরসির পক্ষে তুমুল প্রচার চালাচ্ছিলেন।
তৎকালীন বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ তখন জানিয়েছিলেন, এনআরসি নিয়ে কোনও প্রচার নয়, সিএএ নিয়ে প্রচার চালাতে। কিছুদিন এনআরসি নিয়ে মুখ বন্ধ রাখলেও দিলীপ ঘোষ থেকে শুরু করে রাজ্যের বহু নেতা এখন এনআরসি নিয়ে সরব। দিলীপ ক’দিন ধরে এনআরসি নিয়ে সরব হতে এবার মুকুল রায়ও মোদীর সুরে সুর মিলিয়ে বললেন, এনআরসি হবে না। রাজ্যে এনআরসির কোনও সম্ভবনা নেই। আর মুকুলের এই কথার প্রেক্ষিতে আবার সরব হয়েছেন দলের সাধারণ সম্ফাদক (সংগঠন) সুব্রত চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন, মুকুলবাবুর কাছে কোনও খবর থাকতে পারে, আমার কাছে এনআরসি নিয়ে কোনও খবরই নেই। সবমিলিয়ে রাজ্যে বিজেপি নেতাদের অবস্থা এখন হয়েছে, না ঘরকা না ঘাটকা।