সিএএ-এনআরসি ইস্যুতে গোটা দেশের মধ্যে সবথেকে বেশি হিংসা-হানাহানি ঘটেছে যোগী আদিত্যনাথের রাজ্য উত্তরপ্রদেশে। উত্তরপ্রদেশে নাগরিকত্ব আইন বিরোধী বিক্ষোভে গুলি চালানোর কথা স্বীকারও করে নিয়েছে যোগীর পুলিশ। উত্তরপ্রদেশে বিক্ষোভের কয়েক দিনে গুলিতে ১৬ জন নিহত হয়েছেন। ইতিমধ্যেই শরণার্থী হিসেবে ৩২০০০ জনের নাম কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকে পাঠিয়েছে। কিন্তু বিক্ষোভ তাতেও থামেনি। একের পর এক হুমকির পর এদিন ফের সুর চড়ালেন মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। এদিন তিনি বলেন, ‘বিক্ষোভকারীদের নিজস্ব স্টাইলেই বুঝে নেবে প্রশাসন।’
সেই নিজস্ব স্টাইল কী? ইতিমধ্যেই তা নিয়ে সরব হয়েছে বিরোধী শিবির। আদিত্যনাথ বলেন, ‘চিন্তা করবেন না। সরকার এবং প্রশাসন নিজস্ব স্টাইল খুঁজে পেয়েছে সমাধানের। প্রতিবাদ করার অধিকার সকলের রয়েছে। কিন্তু দেশবিরোধী কাজ করার অধিকার কারও নেই।’ সিএএ-র সমর্থনে আগ্রায় একটি সভা থেকে তিনি বলেন, ‘যাঁরা প্রতিবাদ করছে, তাঁরা ভীতু। তাই এখন নিজেরা পিছনে লুকিয়ে শিশু আর মহিলাদের সামনে পাঠিয়ে দিয়েছে।’
এর আগেও অবশ্য আদিত্যনাথ বলেছিলেন, ‘যাঁরা আজাদি স্লোগান দেয়, তাঁরা আসলে দেশদ্রোহী। তাঁদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ এর আগে দেখা গিয়েছিল, মহিলা প্রতিবাদকারীদের পিছন পিছন হেঁটে যাচ্ছে বিশাল পুলিশবাহিনী। তাঁদের প্রত্যেকের হাতে লাঠি। কেন তাঁদের হেনস্থা করা হচ্ছে-মহিলা প্রতিবাদকারীদের এই প্রশ্নের জবাবে নির্বিচারে লাঠি চালাতে শুরু করল পুলিশ। উত্তরপ্রদেশের এই ভিডিও বুধবার প্রকাশ্যে আসার পর ফের প্রশ্নের মুখে পড়েছিল উত্তরপ্রদেশ পুলিশ। সেই বিতর্ক উস্কে দিয়েছে আরও দু’টি ফুটেজ। একটিতে দেখা যাচ্ছে, রাস্তার ধারের একটি রেস্তোরাঁয় ঢুকে কর্মীদের পেটাচ্ছে পুলিশ, জোর করে বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে রেস্তোরাঁ। তৃতীয় ভিডিওতে রাস্তার ধারের এক বিক্রেতাকে মারধর করে দোকান বন্ধ করার হুঁশিয়ারি দিচ্ছে পুলিশ।
এ দিকে, লখনউয়ের ঘণ্টাঘরের সামনে সিএএ বিরোধী বিক্ষোভ জারি। সেখানে সংখ্যাগরিষ্ঠই মহিলা। এ নিয়ে কার্যত কটাক্ষ করেন মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। কানপুরের এক সভায় তাঁর বক্তব্য, ‘বিরোধীদের বিক্ষোভ দেখানোর সাহস নেই। তাই তারা মহিলা ও শিশুদের ঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে। এই মহিলারা জানেনও না কিসের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করছেন।’ আর এদিন বিজেপির অন্যান্য নেতাদের মতো স্বভাবসিদ্ধভাবেই হুঁশিয়ারি দিলেন যোগী।