সোমবার ৫ দিনের উত্তরবঙ্গ সফরে পাহাড়ে এসেছেন তিনি। এই মুহূর্তে রয়েছেন দার্জিলিংয়ে। আজ দার্জিলিং ম্যালেই নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসুর জন্মজয়ন্তী অনুষ্ঠানে যোগ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর সেই অনুষ্ঠান মঞ্চ থেকেই সরাসরি আক্রমণ করলেন বিজেপিকে। নেতাজির জন্মদিবসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে কটাক্ষ করে তৃণমূল নেত্রী বলেন, ‘নেতাজি ধর্মনিরপেক্ষতার পক্ষে সওয়াল করতেন। দেশকে নেতৃত্ব দেওয়ার ক্ষমতা ছিল নেতাজির। যাঁর এই ক্ষমতা থাকে, তিনিই প্রকৃত নেতা।’
দার্জিলিঙে নেতাজির জন্মজয়ন্তীর অনুষ্ঠানের মঞ্চ থেকে মমতা মনে করিয়ে দেন, ‘হিন্দু, মুসলিম, জৈন, বৌদ্ধ, নেপালি- সবার পাশে দাঁড়াতেন নেতাজি। সওয়াল করতেন ধর্মনিরপেক্ষতার পক্ষে।’ এরপরই কেন্দ্রের মোদী সরকারকে নিশানা করেন তৃণমূল নেত্রী। বলেন, ‘এখন ধর্মনিরপেক্ষদের দেশত্যাগ করানোর চেষ্টা চলছে। আর হিন্দু ধর্মেরই বদনাম করছে বিজেপিই।’ তাঁর কটাক্ষ, ‘নেতাজি বলেছিলেন, ‘তোমরা আমাকে রক্ত দাও, আমি তোমাদের স্বাধীনতা দেব’। আর এখন মানুষের রক্ত নিয়ে রাজনীতি করা হচ্ছে। নিজেদের নাগরিকত্বের দাবি রক্ষা করতে গিয়ে প্রাণ হারাতে হচ্ছে মানুষকে।’
ঠিক এইভাবেই নেতাজির জন্মদিবসের অনুষ্ঠানেও নাগরিকত্ব আইন, এনআরসি, এনপিআর প্রসঙ্গে মুখ খুললেন মমতা। তিনি আরও বলেন, সুভাষচন্দ্র বসুও হিন্দু মহাসভার সমালোচনা করেছিলেন। বিজেপির সৃষ্ট ধর্ম হিন্দুধর্মকেই অপমান করছে। দেশে অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের তাড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। হিন্দু ধর্ম একজনকে নিয়ে নয়, সর্বধর্মসহিষ্ণুতার কথাই বলে। বিজেপির সৃষ্ট ধর্ম হিন্দুধর্ম নয় বলে মন্তব্য করেন তিনি। একইসঙ্গে না করে মোদীকে আক্রমণ করে মমতা বলেন, সবাইকে নিয়ে যিনি চলতে জানেন, তিনিই নেতা, ভেদাভেদ করে কখনও নেতা হওয়া যায় না।
তাঁর কটাক্ষ, ক্ষমতায় এসে বিজেপি নেতারা নেতাজির ফাইল নিয়ে এদিক- ওদিক ঘুরেছেন। কিন্তু এখনও জানাতে পারেননি সুভাষচন্দ্রের মৃত্যু রহস্য। ২৩ জানুয়ারি নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসুর জন্মদিনে ‘জাতীয় ছুটি’ ঘোষণার দাবিও তোলেন মুখ্যমন্ত্রী। প্রসঙ্গত, এর আগেও নেতাজির জন্মদিবসকে জাতীয় ছুটি ঘোষণার দাবি তুলেছিলেন তিনি। তবে কেন্দ্রের তরফে তাতে কর্ণপাত করা হয়নি। গতকাল মিছিল শেষে সভা থেকে ভাষণের সময় ‘সুভাষবাদ ও গান্ধীবাদ’ দুই-ই মেনে চলার আহ্বান জানিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। আজও একই আহ্বান করেন তিনি।