নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন(সিএএ) ও দেশজুড়ে জাতীয় নাগরিক পঞ্জী(এনআরসি) বলবৎ করার কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে পথে নেমেছেন তৃণমূল নেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কলকাতার রাজপথ থেকে রাজ্যের জেলায় জেলায় পথে নেমে করেছেন প্রতিবাদ। তা কখনও শঙ্খ-খোল-কাসর বাজিয়ে, আবার কখনও বা গানের সঙ্গে গলা মিলিয়ে। আর এবার দার্জিলিংয়ে এনআরসির প্রতিবাদে খঞ্জনি-করতাল-একতারা বাজিয়ে পথ হাঁটলেন মমতা। পাশাপাশি, সিএএ-এনআরসি বিরোধী সভা থেকে ফের নিজের অবস্থান স্পষ্ট করে দিয়ে একহাত নিলেন কেন্দ্রীয় স্বারাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে। ‘আমরা যদি মিথ্যা বলি সত্যি কি সেটা বলুন?’ এই ভাষাতেই আজ শাহের উদ্দেশ্যে প্রশ্ন ছুঁড়ে দিলেন মমতা। প্রশ্ন তুললেন নয়া নাগরিকত্ব আইনের লক্ষ্য নিয়েও।
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবারই অমিত শাহ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ বিরোধীদের উদ্দেশ্যে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়ে নাগরিকত্ব আইন নিয়ে বিতর্কে আহ্বান জানান। মঙ্গলবার লখনউয়ের জনসভা থেকে তিনি বলেন, ‘ক্ষমতা থাকলে জনসমক্ষে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন নিয়ে বিতর্কে বসুন।’ মমতার সঙ্গে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী, সমাজবাদী পার্টির নেতা অখিলেশ যাদবদের একযোগে বিঁধে শাহ এই অভিযোগও করেছিলেন যে, ‘বিরোধীরা বাস্তবটা দেখতে পাচ্ছে না। কারণ ওদের চোখে ভোটব্যাঙ্কের রাজনীতির চশমা লাগানো আছে।’ এদিন দার্জিলিংয়ের জনসভায় তারই পাল্টা দিয়ে মমতা বলেন, ‘দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বড় বড় কথা বলছেন। ওঁরা সকালে এক, বিকেলে আরেক কথা বলে।’
এর পরেই মমতা পরপর তিনটি প্রশ্ন ছুঁড়ে দেন শাহের উদ্দেশ্যে। তিনি বলেন, আমরা যদি মিথ্যা বলি সত্যি কী সেটা বলুন? নাগরিকত্ব আইনের মাধ্যমে আপনারা নিজেদের ইচ্ছা মতো কাউকে দেশে রাখবেন আর কাউকে তাড়ানোর পরিকল্পনা করেছেন কি করেননি? তিনি এই প্রশ্নও তোলেন যে, নাগরিকত্ব পেতে গেলে পাঁচ বছর থাকতে হবে এমন কথা বলা আছে কি নেই? তবে নাগরিকত্ব আইন নিয়ে এই তিন প্রশ্ন করেই থেমে থাকেননি মমতা। সেই সঙ্গে মোদী সরকারকে আরও নানা প্রশ্ন বিদ্ধ করেন তিনি। বলেন, দেশের অর্থনীতি বেহাল কেন? কর্মসংস্থান হচ্ছে না কেন? আপনারা শিল্প বন্ধ করছেন কেন? বেসরকারিকরণ হচ্ছে কেন? মমতার দিক থেকে ধেয়ে আসা এ হেন প্রশ্নের তিরে যে বেজায় অস্বস্তিতে গেরুয়া শিবির, তা বলাই বাহুল্য।