সিএএ ও এনআরসি বিরোধিতায় গোটা দেশ উত্তাল। দিল্লীর শাহিনবাগ থেকে কলকাতার পার্ক সার্কাস মোদীর এই সিএএ আইনের বিরুদ্ধে পথে নেমেছেন সাধারণ মানুষ থেকে বিশিষ্ট মানুষেরা। আরও একবার সিএএ বিরোধিতায় পথে নামল কলকাতা। অংশ নিলেন সমাজের বিশিষ্টরা থেকে শুরু করে আইনজীবী, পড়ুয়ারা। কলকাতার ঐতিহ্য প্রেসিডেন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠা দিবসে এনআরসি, সিএএ বাতিলের দাবিতে সংগ্রহ করা হল স্বাক্ষর। অংশ নিলেন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বর্তমান এবং প্রাক্তন পড়ুয়ারা। প্রাক্তনীদের মধ্যে ছিলেন নাট্যব্যক্তিত্ব বিভাস চক্রবর্তী, রাজ্যের প্রাক্তন স্বরাষ্ট্র সচিব প্রসাদরঞ্জন রায়, প্রতিষ্ঠানের ভূগোলের প্রাক্তন অধ্যাপক প্রশান্ত রায়–সহ বিশিষ্টরা।
সাধারণ মানুষেরাও সিএএ-র বিরুদ্ধে পথে নামেন। সারা বাংলা এনআরসি বিরোধী নাগরিক কমিটির কলকাতা জেলা পার্ক সার্কাস, মেটিয়াবুরুজ, হাজরা, বেহালা, শ্যামবাজার, ঢাকুরিয়া, জাকারিয়া স্ট্রিট, রাজাবাজার, চাঁদনি চক–সহ ৩০টি জায়গায় মানববন্ধন করে। সংগঠনের সম্পাদক অংশুমান রায়ের হুঁশিয়ারি, ‘আইন বাতিল না হলে আরও বড়সড় আন্দোলন হবে।’
শুধু তাই নয়, সোমবার কলকাতা প্রেস ক্লাবে ‘সময়ের ডাক, বাংলার প্রতিবাদ’ মঞ্চে মোদী হঠাও, দেশ বাঁচাও স্লোগান উঠল। বক্তব্য পেশ করলেন রাজ্যের কারিগরি শিক্ষা দফতরের মন্ত্রী পূর্ণেন্দু বসু, বিশ্বনাথ চক্রবর্তী, অধ্যাপক অশোকেন্দু সেনগুপ্ত, অর্থনীতিবিদ দীপঙ্কর দে, শিক্ষাবিদ অভীক মজুমদার, সাংবাদিক দেবাশিস ভট্টাচার্য, অধ্যাপক ভাস্কর গুপ্ত, অনন্যা চক্রবর্তী প্রমুখ।
মন্ত্রী পূর্ণেন্দু বসু বলেন, ‘নাগরিকপঞ্জি তৈরি করছে যে সরকার, তারা ক্ষমতায় আছে বলে কি নাগরিকদের পরীক্ষা দিতে হবে? আমরা পরীক্ষা দেব না। আমরা চাই ইউনাইটেড ইন্ডিয়া। আমাদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলন চলছে, চলবে। প্রথম থেকেই এই আন্দোলনে সামিল হয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়’। অনন্যা চক্রবর্তী বলেন, ‘নাগরিকপঞ্জি অত্যন্ত বিপজ্জনক। দেশে চাকরি নেই। বড় বড় শিল্প কারখানা বেচে দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে। নাগরিকপঞ্জি নিয়ে কেন্দ্র মানুষের নজর ঘুরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে।’ অর্থনীতিবিদ দীপঙ্কর দে বলেন, ‘৬টি রাজ্য থেকে কেন্দ্রীয় সরকার কোল সেস নিয়েছে। নাগরিকপঞ্জি নিয়ে বাঙালির ওপর আঘাত আনছে কেন্দ্র।’
স্বাধীন ভারতে এমন পরিস্থিতি আগে হয়নি। ধর্ম দিয়ে মানুষের পেট ভরে না। মানুষ চায় শান্তির আবহ, বেকারত্ব থেকে মুক্তি। কিন্তু দেশ জুড়ে মো-শা এর তাণ্ডবে মানুষ জর্জরিত। সুষ্টভাবে দেশ চালাতে অসফল হওয়ায় মোদী দেশের বড় সমস্যা থেকে মানুষের দৃষ্টি ঘোরানোর জন্য এই কাজ করছেন বলে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মত।