নাগরিকপঞ্জী আর সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন নিয়ে অনেকদিন ধরেই সরব দেশের বুদ্ধিজীবী মহল। দিন কয়েক আগেই বিশিষ্টজনদের ‘কাগজ দেখাব না’ ভিডিওয় প্রত্যেকের গলায় শোনা গিয়েছিল এক কথা, এক সুর- ‘কাগজ আমরা দেখাব না’। যা নিয়ে তাঁদের উদ্দেশ্যে তোপ দেগে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেছিলেন, ‘বিশিষ্টরা ননসেন্স, নেমকহারাম।’ দিলীপের সুর শোনা গিয়েছিল বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁয়ের গলাতেও। দিলীপ-সৌমিত্রের পথে হেঁটে এবার বিদ্বজনদের বিঁধলেন বিজেপির সায়ন্তন বসু। “বিশিষ্টজনদের ক্ষেত্রে ‘কুকুর’ শব্দটি প্রয়োগে আপত্তি থাকলে তাঁদের ‘বাঁদর’ বলুন”- একথা বলেই বিতর্কে জড়ালেন বিজেপি নেতা।
প্রসঙ্গত, নাগরিকত্ব আইনের বিরোধিতায় সরব গোটা দেশ। ক্ষোভে ফুঁসছে দেশবাসী। পথে নেমেছেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শান্তিপূর্ণ পথে আন্দোলনের ডাক দিয়েছেন তিনি। একই ভাবে আইনের বিরোধিতায় পথে নেমেছেন বুদ্ধিজীবীরাও। সিএএ ও এনআরসির প্রতিবাদে সুর চড়িয়েছেন তাঁরা। আর সেই কারণেই বারবার বিজেপি নেতৃত্বের দ্বারা বিদ্ধ হচ্ছেন বিশিষ্টজনেরা। এ নিয়েই রবিবার বসিরহাটের সভা থেকে বুদ্ধিজীবীদের তীব্র আক্রমণ করেন বিষ্ণুপুরের সাংসদ সৌমিত্র খাঁ। বলেন, ‘যাঁরা নিজেদের বুদ্ধিজীবী বলে রাস্তায় নামছেন, তাঁরা আদতে বুদ্ধিজীবী নন। তাঁদের বলছি, আপনারা শয়তান। যাঁরা শিক্ষক, তাঁরাই আদতে বুদ্ধিজীবী।’
শুধু তাই নয়। বুদ্ধিজীবীরা রাজ্য সরকারের থেকে নিয়মিত টাকা পান বলেই তৃণমূলের সমর্থন করে, এমন বিস্ফোরক অভিযোগও করেন সৌমিত্র। বলেন, ‘যারা পার্ক স্ট্রিট কাণ্ডে চুপ থাকেন, তাঁরা তৃণমূলের কুকুর ছাড়া আর কিছু নয়।’ বিজেপি সাংসদের এই মন্তব্যকে ঘিরেই শুরু হয় বিতর্ক। এই পরিস্থিতিতে দলীয় সাংসদের পাশে দাঁড়িয়েছেন সায়ন্তন। সোমবার তিনি বলেন, “বিশিষ্টজনদের ক্ষেত্রে ‘কুকুর’ শব্দ প্রয়োগে যদি আপত্তি থাকে, কুকথা বলে মনে হয় সেক্ষেত্রে ‘বাঁদর’ বলতেই পারেন।” সায়ন্তন বসুর এই মন্তব্যেই ফের নতুন করে শুরু হয়েছে বিতর্ক। রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক মহলের তীব্র নিন্দার মুখে পড়তে হচ্ছে এই বিজেপি নেতাকে।