গত অক্টোবরেই আন্তর্জাতিক অর্থ ভাণ্ডার (আইএমএফ)-এর হিসেব বলেছিল, চলতি অর্থবর্ষে ভারতের জিডিপি বৃদ্ধির হার ৬.১ শতাংশ হতে পারে। সোমবার আইএমএফের ওয়ার্ল্ড ইকনমিক আউটলুক প্রকাশিত হয়েছে। সেই রিপোর্টে ভারতের সম্ভাব্য বৃদ্ধির হার ১৩০ বেসিস পয়েন্ট কমিয়ে আনা হয়েছে। এ নিয়ে মুখ খুলেছেন খোদ আইএমএফের প্রধান অর্থনীতিক গীতা গোপীনাথ। ভারতের অর্থনৈতিক মন্দা বিশ্ব অর্থনীতিতেও বড় ধরনের প্রভাব ফেলছে বলে জানিয়েছেন তিনি। গীতার দাবি, ভারতীয় অর্থনীতিকে মন্দা গ্রাস করছে। তার ফলে আশঙ্কা করা হচ্ছে গোটা বিশ্বের অর্থনৈতিক বৃদ্ধির সম্ভাবনা কিছুটা হলেও ধাক্কা খাবে। মনে করা হচ্ছে, বিশ্ব অর্থনীতির বৃদ্ধির হার এর ফলে ০.১ শতাংশ কমতে পারে।
উল্লেখ্য, এর আগে আইএমএফ জানিয়েছিল ২০১৯-২০ অর্থবর্ষে ভারতের বৃদ্ধির হার থাকবে ৬.১ শতাংশ। কিন্তু তিন মাসের মধ্যেই পরিস্থিতি বিবেচনা করে তাদের হিসাব পরিবর্তন করেছে আইএমএফ। তাদের বক্তব্য, ভারতের বাজারের যা অবস্থা তাতে টেনেটুনে ৪.৮ শতাংশ হারে বৃদ্ধি হতে পারে মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদন তথা জিডিপির। ভারতের বাজারের এহেন পরিস্থিতির কারণ মোটামুটি ভাবে পরিষ্কার। একদিকে যেমন বিভিন্ন পণ্যের চাহিদা কমছে, শিল্পপতিরা নতুন বিনিয়োগ করার সাহস পাচ্ছেন না। তেমনি সেই সঙ্গে টাকার দাম ওঠাপড়া করছে ঘন ঘন। আর সর্বোপরি বাড়ছে মুদ্রাস্ফীতি।
আইএমএফের মতে, এসব মিলিয়ে উন্নয়নশীল দেশগুলির নিরিখেও পিছিয়ে পড়ছে ভারত। মোট জাতীয় উৎপাদন বা জিডিপি-র বিকাশের হার এজন্যই কমে যাচ্ছে। বস্তুত গত সাত বছরে জিডিপি বৃদ্ধির হার কখনও এত কমেনি।।তাদের আরও বক্তব্য, ইউরোপ, আমেরিকা ও জাপানের মতো উন্নত দেশের তুলনায় ভারতের অর্থনীতির হাল আরও খারাপ। গীতার দাবি, ভারতে সব থেকে সঙ্কটে রয়েছে ফিনান্সিয়াল সেক্টর। বিশেষ করে নন ব্যাঙ্কিং ফিনান্স কর্পোরেশনগুলোর হাল খুবই খারাপ। ঋণের বৃদ্ধি হচ্ছে না, অর্থাৎ বাজারের অবস্থা দেখে ঝুঁকি নেওয়ার প্রবণতাও কমছে। আর তার পাশাপাশিই গ্রামীণ এলাকায় আয়ে কোনও বৃদ্ধিই হচ্ছে না। ফলে গ্রামীণ অর্থনীতিতে চাহিদা কমে গিয়েছে।