২০১৮ সাল থেকে দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী শুরু করেছিলেন ‘পরীক্ষা পে চর্চা’। যেখানে গতবছর উপস্থিত ছিল দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা। কিন্তু আশ্চর্যের, এবারের অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত নন দেশের কোনও বিশ্ববিদ্যালয়-পড়ুয়াই। এখানে উপস্থিত থেকে প্রশ্ন করতে পারবে শুধু স্কুল-পড়ুয়ারাই। এমনকি তাঁদের সঙ্গে আসা শিক্ষক, অভিভাবকদেরও সে সুযোগ থাকবে না। যা শুনে আন্দোলনকারী ছাত্র-ছাত্রীদের অনেকের কটাক্ষ, কড়া প্রশ্নের ভয়েই বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়াদের আমন্ত্রণ জানানোর সাহস দেখায়নি মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রক। শিক্ষক এবং অভিভাবকদেরও মুখে কুলুপ আঁটার বন্দোবস্ত করা হয়েছে।
আন্দোলনকারী পড়ুয়াদের একটা বড় অংশ এতে প্রধানমন্ত্রীকে রীতিমতো তুলোধনা করেছে। যেমন জেএনইউয়ের ছাত্র সংসদ জেএনইউএসইউয়ের ভাইস প্রেসিডেন্ট সাকেত মুনের কথায়, ‘সারা দেশে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস প্রতিবাদে উত্তাল। কোথাও কারণ ফি বৃদ্ধি, তো অন্য কোথাও কারণ এনআরসি-সিএএ। কিন্তু কোথাও পড়ুয়াদের সঙ্গে কথা বলেননি মোদী বা তাঁর কোনও প্রতিনিধি। পড়ুয়াদের প্রশ্নকে ভয় পাচ্ছেন বলেই সাজানো মঞ্চে ডাকছেন ছোট ছেলে-মেয়েদের। আগে থেকে ঠিক করে রাখা কিছু প্রশ্নের জবাব দেবেন।’ জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়ার এক ছাত্রের মন্তব্য, ‘যে ভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের চত্বরে ঢুকে পুলিশ তাণ্ডব চালিয়েছে, লেলিয়ে দেওয়া হচ্ছে মুখ ঢাকা দুষ্কৃতীদের, তাতে আসল প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার মুখ প্রধানমন্ত্রীর নেই।’
এই পরিস্থিতিতে সোমবার মোদী যখন মঞ্চে থাকবেন, তখনও রাস্তায় প্রতিবাদ জানাতে থাকবেন পড়ুয়ারা। মিছিল হবে মান্ডি হাউস থেকে। ছাত্র সংগঠন এআইএসএ-র প্রেসিডেন্ট এন সাই বালাজির কটাক্ষ, ‘কেউ পাবজি খেলেন কি না, এই জাতীয় প্রশ্নেই প্রধানমন্ত্রী স্বচ্ছন্দ। ক্ষুব্ধ পড়ুয়াদের সত্যিকারের প্রশ্নের উত্তর নেই তাঁর ঝুলিতে।’ গত বার এক অভিভাবকের কাছে ছেলের মোবাইল-আসক্তির অভিযোগ শুনে সে পাবজি খেলে কি না, জানতে চেয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। বিস্তর আলোচনা হয়েছিল তা ঘিরে। দিল্লী বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া বিক্রম অনুরাগ, শিবাঞ্জলি কাশ্যপরা এই বিষয়ে দাবি করেন, ‘কোনও বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে পড়ুয়াদের মুখোমুখি হওয়ার সাহস নেই মোদী কিংবা তাঁর কোনও মন্ত্রীর। তাই এভাবেই এড়িয়ে যেতে হচ্ছে তাঁদের।’