বিভিন্ন ইস্যুতে একের পর এক উস্কানিমূলক মন্তব্য। একাধিকবার তাঁকে সাবধান করে হলেও শোধরাননি। কখনও ‘কাশ্মীরিদের বয়কট’-এর ডাক দিয়েছেন। কখনও আবার প্রশ্ন তুলেছেন ‘বাংলায় বসে ইস্টবেঙ্গলকে সমর্থন’ কেন? এমনই অজস্র টুইট করে বিতর্কে জড়িয়েছেন তিনি।সম্প্রতি ক্যাব নিয়েও বেলাগাম মন্তব্য করেছিলেন। বলেছিলেন, ‘যাঁরা ক্যাবের বিরুদ্ধে কথা বলছেন, তাঁরা উত্তর কোরিয়া চলে যান।’ শেষমেশ গত ডিসেম্বরেই তাঁকে মেঘালয়ের রাজ্যপালের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু তাতেও শিক্ষে হল না তথাগত রায়ের। এবার তাঁর বিতর্কিত টুইটের তালিকায় নবতম সংযোজন একটি ভিডিও শেয়ার করে বাংলায় লেখা বড়সড় পোস্ট।
https://twitter.com/tathagata2/status/1217503121150136320
তথাগতর দাবি, ভিডিওটি পাকিস্তানের, যাতে দেখা যাচ্ছে মাকে মারধর করে হিন্দু নাবালিকাকে ছিনিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। কিন্তু আদতে সেটি দু’বছরেরও বেশি পুরনো এবং পাকিস্তানের নয়, রাজস্থানের। টুইটারে ওই ভিডিও পোস্ট হতেই এ রাজ্যের প্রাক্তন বিজেপি নেতার ভুল ধরিয়ে দিয়েছেন অনেকে। একাধিক সংবাদমাধ্যম তা নিয়ে খবরও করেছে। কিন্তু তার পরেও অবস্থানে কার্যত অনড় বর্তমানে মেঘালয়ের প্রাক্তন রাজ্যপাল। তাঁর দাবি, তিনি ‘চেক’ করেছেন। সংবাদমাধ্যমের দাবি ঠিক নয়।
তা কী আছে সেই ভিডিওতে? ওই ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, এক মহিলাকে মারধর করে তাঁর নাবালিকা মেয়েকে টেনেহিঁচড়ে নিয়ে যাচ্ছে এক যুবক। ভিডিওর ক্যাপশনে তথাগত লিখেছেন, মুসলিম-খ্রিস্টানদের জন্য বহু দেশ থাকলেও ১৫০ কোটি হিন্দুর জন্য কোনও দেশ নেই। তাঁর দাবি, ওই নাবালিকা হিন্দু এবং ওই যুবক মুসলমানের এবং ভিডিওটি পাকিস্তানের। কিন্তু একাধিক সংবাদমাধ্যমের তদন্তে উঠে এসেছে, ওই ভিডিওটি রাজস্থানের।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, যোধপুরের বাপ মহকুমার ওই ঘটনা ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরে। শওকত নামে এক স্থানীয় যুবকের সঙ্গে ওই নাবালিকার বিয়ে হয়েছিল। কিন্তু নাবালিকার বয়স ১৮ বছর না হওয়া পর্যন্ত তাঁর মা তাঁকে স্বামীর কাছে যেতে দিতে চাইছিলেন না। অবশেষে এক দিন শওকত ও তার বন্ধুরা ওই গ্রামে গিয়ে নাবালিকাকে জোর করে তুলে নিয়ে যায়। বাধা দেওয়ায় নাবালিকার মাকে মারধর করে। পুলিশ জানিয়েছে, ওই ঘটনায় শওকতকে গ্রেফতার করা হয়েছিল এবং নির্দিষ্ট ধারায় তাঁর বিরুদ্ধে মামলাও হয়েছিল। কিন্তু পুলিশের তথ্যের পরেও নিজের দাবিতেই অনড় তথাগত। অন্যদিকে, তাঁর নিন্দা করে নেটিজেনরা বলছেন, বিতর্কিত টুইট করতেই যিনি অভ্যস্ত, তাঁর হাত থেকে এমন মন্তব্য বা পোস্ট আশ্চর্যের কিছু নয়।