নতুন বছরের শুরুতেই জাতীয় জনসংখ্যা রেজিস্টার (এনপিআর) নিয়ে নতুন করে ধোঁয়াশা তৈরি করে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের একটি সূত্র জানিয়েছিল যে, এবার এনপিআরের কাজেও লাগবে বায়োমেট্রিক তথ্য। বেশ কয়েকটি রাজ্যে এনপিআরে সাম্প্রতিকীকরণের সময় বায়োমেট্রিক তথ্য সংগ্রহ করা হবে। তবে তারপর থেকেই এনপিআর নিয়ে সরাসরি হুঁশিয়ারির পথে হেঁটেছে মোদী সরকার। প্রথমেই তারা জানিয়ে দিয়েছিল যে, জনগণনা ও এনপিআরের কাজ করতে না চাইলে যে কোনও রাজ্য সরকারি আধিকারিকের ৩ বছরের জেল হতে পারে। আর এবার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের তরফে জানিয়ে দেওয়া হল, এই এনপিআর-এর সময় যদি কেউ সরকারি প্রতিনিধিদের তথ্য দিতে না চান, বা ভুল তথ্য দেন, তাহলে সেই প্রতিনিধি চাইলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে ১০০০ টাকা জরিমানা করতে পারেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, ‘নাগরিকত্ব আইনের ১৭ নম্বর ধারায় বলা হয়েছে কোনও ব্যক্তি ভুল তথ্য দিলে তাঁকে ১০০০ টাকা জরিমানা করা যেতে পারে। কিন্তু ২০১১ ও ২০১৫ সালের জনগণনা পঞ্জির সময় এই নিয়ম ব্যবহার করা হয়নি। অর্থাৎ কাউকে জরিমানা করা হয়নি।’
প্রসঙ্গত, দেশজুড়ে বিক্ষোভের মধ্যে ডিসেম্বর মাসে এনআরসি, এনপিআর ও নাগরিকত্ব আইন বিরোধী ফোরামের একটি আলোচনা সভায় লেখিকা অরুন্ধতী রায় সবাইকে ভুল তথ্য দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন। তিনি বলেন, ‘যখন সরকারি আধিকারিকরা আপনাদের বাড়িতে গিয়ে এনপিআর-এর জন্য নাম জিজ্ঞাসা করবে তখন তাঁদের রঙ্গা-বিল্লা কিংবা কুংফু-কাট্টার মতো নাম বলবেন।’ তবে এনপিআর-এর কাজে যুক্ত আধিকারিকরা জানিয়েছেন, প্রাথমিকভাবে তাঁরা দেখেছেন আধার, ভোটার, ড্রাইভিং লাইসেন্স কিংবা পাসপোর্ট সংক্রান্ত তথ্য দিতে কারও কোনও সমস্যা নেই। কেবলমাত্র প্যান সংক্রান্ত তথ্য দিতে তাঁরা চাইছেন না। এই সমস্যা হওয়ার জন্য এনপিআর-এর সময় প্যান সংক্রান্ত কলাম বাদ দেওয়া হয়েছে বলে জানানো হয়েছে। ইতিমধ্যেই দেশজুড়ে ৭৩টি জেলা থেকে প্রায় ৩০ লক্ষ লোকের তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। উল্লেখ্য, ১ এপ্রিল থেকে দেশজুড়ে এই এনপিআর-এর কাজ শুরু হওয়ার কথা। আজ শুক্রবার দিল্লীর আম্বেদকর ভবনে এ নিয়ে এক বৈঠক ডেকেছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। যেখানে সমস্ত রাজ্য যোগ দিলেও কোনও প্রতিনিধি পাঠায়নি বাংলা।