একজোট হয়েছেন রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যরা। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সুরঞ্জন দাসকে সভাপতি এবং উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সুবীরেশ ভট্টাচার্যকে সম্পাদক করে মঙ্গলবারই আত্মপ্রকাশ করেছে উপাচার্য পরিষদ। সেই সংগঠনের তরফে ধর্মতলায় তৃণমূল ছাত্র পরিষদের ধর্নামঞ্চে উপাচার্যদের যাওয়া নিয়ে তাঁদের পাশেই দাঁড়ালেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। একই সঙ্গে ফের একবার আচার্য হিসেবে রাজ্যপালের ভূমিকারও তীব্র সমালোচনা করলেন তিনি।
প্রসঙ্গত, উপাচার্য পরিষদ গঠনের ঘোষণার পর মঙ্গলবার তৃণমূল ছাত্র পরিষদের এনআরসি, সিএএ এবং এনপিআর–বিরোধী ধর্নামঞ্চে যান উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সুবীরেশ ভট্টাচার্য, সিধো-কানহু-বিরসা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য দীপক কর এবং কোচবিহারের পঞ্চানন বর্মা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য দেবকুমার মুখোপাধ্যায়।
তা নিয়ে বুধবার শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘ওটা রাজনৈতিক ধর্নামঞ্চ নয়। এনআরসি-সিএএ-এনপিআর বিরোধী প্রতিবাদসভা। যেখানে দলমত নির্বিশেষে, বিজেপির বিরুদ্ধে যাঁরা, তাঁরা সকলেই গিয়েছেন। সকলেই প্রতিবাদ করছেন। উপাচার্যরা দর্শক হিসেবেই গিয়েছিলেন। পরিষদ গঠনের পর ওঁরা আমার সঙ্গে দেখা করার সময় চান। আমি ওখানে থাকায় তাঁরা ধর্নামঞ্চে আসেন। এর মধ্যে কোনও অন্যায় নেই। উপাচার্যরা রাজ্যপালের সমর্থক, না কি পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের, এটা তার লড়াই নয়।’
আচার্য হিসেবে রাজ্যপাল জগদীপ ধনকরের কার্যকলাপেরও তীব্র সমালোচনা করেন শিক্ষামন্ত্রী। তাঁর কথায়, ‘আচার্য হিসেবে এই রাজ্যপালের যা ভূমিকা তা রাজ্যে আগে কখনও দেখিনি। এই ধরনের ধ্বংসাত্মক আচরণ আগে দেখিনি। সরকার উপাচার্যদের স্বাধিকারে কখনই হস্তক্ষেপ করে না। কিন্তু বিধানসভায় আইন পাশ করে যে বিধি তৈরি হয়েছে সরকার সেই বিধি অনুযায়ী চলবে। প্রয়োজনে রাজ্যপালের ব্যাপারে আরও কঠোর হব। জাতীয় শিক্ষানীতিতে রাজ্যপালের ভূমিকা ‘ভিজিটর’-এর।’
উল্লেখ্য, তাঁর ডাকা বৈঠকে উপাচার্যদের না যাওয়া নিয়ে রাজ্যপাল বলেছেন, উপাচার্যরা তাঁর কাছে না এলে তিনি কোথায় সমস্যা জানতে পারবেন না এবং সমাধানও করতে পারবেন না। এ নিয়ে পার্থ বলেন, ‘উনি দফতরকে বাদ দিয়ে আচার্য হতে চাইছেন। কেশরীনাথ ত্রিপাঠী উপাচার্যদের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন। আমরা না বলিনি। কারণ, উনি বৈঠকে শিক্ষামন্ত্রী, উচ্চশিক্ষা সচিবকে থাকতে বলেছিলেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘রাজ্যপাল নিজের জনসংযোগ করার জন্য এসেছেন। তিনি সরকারি বৈঠকে তাঁর স্ত্রীকে নিয়ে যাচ্ছেন। এটাও তো অসাংবিধানিক। আমি দু’জনের প্রতিই ব্যক্তিগতভাবে শ্রদ্ধাশীল। কিন্তু এই ধরনের আচরণ আগের রাজ্যপালদের মধ্যে দেখিনি। উনি শিক্ষা, স্বাস্থ্য এবং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দফতরের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েছেন। এর থেকে বোঝা যাচ্ছে উনি কী চাইছেন। সরকারের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে উনি শিখণ্ডী হচ্ছেন। এটা ওঁর বোঝা উচিত।’