প্রকাশ্যে হুমকি দেওয়াই হোক বা অশালীন-বেফাঁস মন্তব্যের ফোয়ারা ছোটানো – সবেতেই গেরুয়া শিবিরের জুড়ি মেলা ভার। বিরোধী দলের নেতানেত্রীই হোক বা বিরোধী মত পোষণকারী কোনও বিদ্বজন, তাঁদের বিঁধতে গিয়ে বরাবরই বেপরোয়া মনোভাব দেখিয়েছেন বিজেপির নেতা-মন্ত্রীরা। তবে সেই তালিকায় একটু ওপরের দিকেই নাম থাকে দিলীপ ঘোষের। কড়া কথার জন্য তিনি বিখ্যাত। বারবার তার বক্তব্য নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে।
ক’দিন আগেই নদীয়ায় একটি জনসভায় তিনি বিরোধীদের আন্দোলনকারীদের ওপর গুলি চালানোর কথা বলে এবং তাঁদের কুকুরের মতো মারার কথা বলে হইচই ফেলে দেন রাজ্য রাজনীতিতে। এরইমধ্যে আবার বাংলাকে ‘সবচেয়ে বড় দেশদ্রোহীতার গড়’ বলে নয়া বিতর্কও বাঁধিয়েছেন। শুধু তাই নয়। বিরোধী মত পোষণকারী বুদ্ধিজীবীদের সরাসরি ‘নেমকহারাম’, ‘ননসেন্স’ বলতেও কোনও কসুর করেননি। এ নিয়ে তাঁর দলের মধ্যেও দ্বিমত তৈরি হয়েছে। কিন্তু এত কিছুর পরেও তাঁর ওপরেই ভরসা রাখল গেরুয়া শিবির। যে কারণে ফের রাজ্য বিজেপির সভাপতি নির্বাচিত হলেন বিতর্কিত দিলীপ। আর দ্বিতীয়বারের জন্য রাজ্য সভাপতি হয়েই দিলীপ ঠারেঠোরে বুঝিয়ে দিলেন, তাঁর নামের সঙ্গে জড়িয়ে থাকা কোনও বিতর্ক-অভিযোগকেই পাত্তা দিতে নারাজ তিনি।
উল্লেখ্য, বেশ কিছুদিন ধরেই বিজেপির সাংগঠনিক নির্বাচন পর্ব চলছে। বৃহস্পতিবার ছিল রাজ্য বিজেপির সভাপতি ঘোষণার দিন। সেখানে আর কোনও প্রতিদ্বন্দী না থাকায় সর্বসম্মতিক্রমে দিলীপ ঘোষের নামই ঘোষণা করে বিজেপি কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। আর কলকাতায় ন্যাশনাল লাইব্রেরির সভাগারে সভাপতি নির্বাচনের পরে বক্তব্য রাখতে গিয়ে দিলীপ বলেন, ‘আমার কথা নিয়ে অনেক সমালোচনা হয়। আসলে সেটা আমার কথা নিয়ে নয়, বিজেপির কথা নিয়ে। রাজনৈতিক ভাবে ফুরিয়ে যাওয়া নেতারা মানতেই পারেন না বিজেপি এত কথা বলবে। কিন্তু মনে রাখতে হবে এখন বিজেপির বলার সময়। সবাইকে শুনতেই হবে।’ আর এরপরেই দিলীপ সাফ জানিয়ে দেন, ‘কেউ আমার মুখ থেকে মিষ্টি কথা আশা করবেন না।’