দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা টালমাটাল। জিডিপির হার ও তার সঙ্গে মুদ্রাস্ফীতিতে কপালে চিন্তার ভাঁজ বণিককুলের। এমন অবস্থায় রাজ্য ও জেলাস্তরের ১৯টি বণিকসভার ৬০ জন প্রতিনিধির সঙ্গে মঙ্গলবার দুপুরে নবান্ন সভাঘরে জরুরি বৈঠক করেন অর্থমন্ত্রী ডঃ অমিত মিত্র।
বৈঠক শেষে অমিত মিত্র জানান, “এরকম একটা পরিস্থিতিতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরিকল্পিত নানা সামাজিক প্রকল্পকে সাধুবাদ জানিয়েছে বণিকসভা। এই বৈঠকে কর বৃদ্ধি করা বা কমানো নিয়ে বণিকসভার প্রতিনিধিরা তেমন কিছু বলেননি। গোটা দেশের আর্থিক অবস্থার বেহাল দশাতেই তারা বেশি মাত্রায় উদ্বিগ্ন”।
প্রসঙ্গত, মুদ্রাস্ফীতি সংক্রান্ত রিপোর্ট নিয়েও কেন্দ্র সরকারকে দুষেছেন রাজ্যের অর্থমন্ত্রী। তাঁর কথায়, “অর্থনীতির নিয়ম অনুযায়ী, মুদ্রাস্ফীতি হলে কর্মসংস্থান বাড়ে। কিন্তু এ কেমন মুদ্রাস্ফীতি! যেখানে কর্মসংস্থান বৃদ্ধি পাওয়া তো দূরের কথা, উল্টে কাজ হারাচ্ছেন লাখ লাখ মানুষ। এটাকে ইনফ্লেশন নয়, স্ট্যাগফ্লেশন বলে”। প্রসঙ্গত, একই সঙ্গে অর্থনীতির শ্লথ গতি ও মূল্যবৃদ্ধির চড়া হারের প্রভাব যে ভাবে দেশের অর্থনীতিতে চেপে বসছে তাকেই অর্থনীতির ভাষায় স্ট্যাগফ্লেশন বলে।
এছাড়াও অমিতবাবু মোদীর নোটবাতিল ও জিএসটি নিয়ে তীব্র কটাক্ষ করেন। তিনি চোখে আঙুল দিয়ে দেখান যে, নোটবাতিলের আগে মোদী জমানাতেই জিডিপি’র হার ছিল ৮.১ শতাংশ। এখন সেটা পাঁচের কম। তবে দেশের অর্থনীতির এই হাল হলেও, রাজ্য তার নিজস্ব বৃদ্ধির হার ধরে রেখেছে বলে এ দিন দাবি করেছেন অর্থমন্ত্রী। তিনি বলেন, গত বছর দেশের মধ্যে ১২.৫% বৃদ্ধির হার এক মাত্র পশ্চিমবঙ্গেরই ছিল। আশা, এ বারেও তা ১০ শতাংশের কাছাকাছি থাকবে।
অর্থমন্ত্রী আরও জানান, কয়লা, অপরিশোধিত তেল, সিমেন্ট, ইস্পাত, বিদ্যুৎ, পেট্রপণ্যের মতো আটটি গুরুত্বপূর্ণ সেক্টরে দেশের বৃদ্ধির হার মাইনাস ৫.৮ শতাংশ। মোদী সরকারের তীব্র বিরোধিতা করে অর্থমন্ত্রী জানান, যে সময় দেশের অর্থনীতির বেহাল দশা নিয়ে আলোচনা করা উচিত, তখন দেশের প্রধানমন্ত্রী ধর্ম নিয়ে মানুষের মধ্যে বিভেদের রাজনীতিতে মেতেছে।