ক্ষমতায় এলেই সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন বাতিল করে দেবে কংগ্রেস। সোমবার এমনটাই জানালেন কংগ্রেস নেতা অখিলেশ যাদব সিং। তাঁকে প্রশ্ন করা হয়, কেন্দ্রে ক্ষমতায় এলে কি কংগ্রেস নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন বাতিল করে দেবে? অখিলেশের স্পষ্ট বক্তব্য, ‘হ্যাঁ একদম। আমরা যে ভাবেই হোক নাগরিকত্ব আইন বাতিল করে দেব।’
যদিও সেটা করার জন্য কংগ্রেসকে সংখ্যাগরিষ্ঠতা-সহ যথেষ্ট সংখ্যক সাংসদ সংসদে পাঠাতে হবে। তবেই সেটা সম্ভব। সিএএ ও এনআরসি বিরোধিতায় যেভাবে হোক এই কাজটাই করা এখন কংগ্রেসের প্রধান লক্ষ্য। এর জন্য যে কোনও ঝুঁকি নিতে কংগ্রেস প্রস্তুত। ২০১৪ সালের নির্বাচনে পরাজয়ের পর কারণ খুঁজতে গিয়ে কংগ্রেসের অন্দরে উঠে আসে, সংখ্যালঘু সমাজকে অতিরিক্ত তোষণ করা একটা বড় কারণ ছিল। দলের অন্দরের এই রিপোর্টের কথা মাথায় রেখে তৎকালীন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী ‘নরম হিন্দুত্বের’ পথেও হেঁটেছিলেন। কিন্তু কংগ্রেসের এই পন্থা বেশি কার্যকর হয়নি।
কিন্তু এতেও লাভ না হওয়ায় দ্রুত স্ট্র্যাটেজি পরিবর্তন করতে শুরু করেছে কংগ্রেস। এখন ‘জাতীয়তাবাদ ও হিন্দুত্ব’-তে না আটকে বেকারত্ব, মূল্যবৃদ্ধি এবং দেশের আর্থিক পরিস্থিতির দিকে নজর দেওয়ার চেষ্টা করছে সোনিয়া গান্ধীর দল। কেননা ২০১৯ সালের ভোটে প্রধানমন্ত্রীর ‘উজ্জ্বলা’, ‘শৌচালয়’-এর মতো প্রচারের হাতিয়ার বেশি কার্যকর হয় আম আদমির কাছে। কংগ্রেস অন্যদিকে বালাকোট ও রাফালের মতো ইস্যুতে নিজেরাই জড়িয়ে যায়। এই অবস্থায় নতুন রণনীতি ঠিক করে ফেলেছে প্রধান বিরোধী দল। নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন ও এনআরসি নিয়ে সংখ্যালঘুদের ক্ষোভকে মোদী সরকারের বিরুদ্ধে ভোটবাক্সে প্রতিফলিত করতে চাইছে কংগ্রেস। যার সব থেকে বড় অগ্নিপরীক্ষা ২০২২ সালে উত্তরপ্রদেশের বিধানসভা ভোটে হতে চলেছে।
এই দুই প্রধান ইস্যু ছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে পড়ুয়াদের ওপর হামলা, আর্থিক দুরাবস্থা, বেকারকত্ব, কৃষক সঙ্কট এবং মহিলা নিরাপত্তা নিয়ে ব্যাপকভাবে জনসংযোগ অভিযান শুরু করবে কংগ্রেস। শনিবার ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে খবর। মূলত নরেন্দ্র মোদী সরকারের বিরুদ্ধে এবার পথে নেমেই এই কাজ করতে চাইছে প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর দল।