নতুন বছরে প্রথম সিরিজ জয়ের স্বাদ পেতে শুক্রবার শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে তৃতীয় টি-২০ ম্যাচে মুখোমুখি হচ্ছে ‘টিম ইন্ডিয়া’। গুয়াহাটিতে, প্রথম ম্যাচটি বৃষ্টিতে ভেস্তে গিয়েছিল। দ্বিতীয় ম্যাচে ভারত সহজেই জিতেছে সাত উইকেটে। কোনওভাবেই চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিতে পারেনি শ্রীলঙ্কা। আর সেই কারণেই মনে করা হচ্ছে, কোহলির বাহিনীর সিরিজ জেতাটা শুধু সময়ের অপেক্ষা।
আজ, শুক্রবার পুণেয় শেষ টি-টোয়েন্টি ম্যাচের আগে জয়ের জন্য মনঃসংযোগ রীতিমতো তুঙ্গে ভারতীয় শিবিরে। দলের অধিনায়কের টুইট বার্তা দেখেই তা বোঝা যাচ্ছে। এ দিন নেটে ব্যাট করার একটি ছবি টুইট করেন বিরাট। সঙ্গে লিখে দেন, ‘‘বোলারের হাতে বল ও ছোলা-বাটোরা দু’টোই সমান মনঃসংযোগ নিয়ে দেখতে হয়।’’ মনে করা হচ্ছে, বোলারের হাত থেকে বেরোনো বল যেন উইকেট ভেঙে দিয়ে না যায়, সেটা যে মনঃসংযোগ দিয়ে দেখছেন, তেমনই নিয়ন্ত্রিত ডায়েট ভেঙে ছোলা-বাটোরা যাতে খাবার প্লেটে না উঠে আসে, সেটাও সমান মনোযোগ দিয়ে দেখছেন কোহলি। ভারতীয় শিবিরে এই মুহূর্তে একটাই প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে। তা হল, শুক্রবার বিরাট কোহলিদের চূড়ান্ত এগারো কী হবে।
ভারত অধিনায়ক বিরাট কোহলি উইনিং কম্বিনেশন ধরে রাখবেন, নাকি টি-২০ বিশ্বকাপের কথা মাথায় রেখে প্রথম একাদশে কিছু পরিবর্তন করবেন, সেটাই দেখার। সঞ্জু স্যামসন কিংবা মণীশ পাণ্ডে একের পর এক সিরিজে ভারতীয় স্কোয়াডে থাকলেও, খেলার সুযোগ থেকে বঞ্চিত। তাই এই ম্যাচে সঞ্জু কিংবা মণীশের মধ্যে একজন প্রথম একাদশে জায়গা করে নিলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।
এমনিতেই রোহিত শর্মা এই সিরিজে বিশ্রাম নিয়েছেন। ফলে তাঁর জায়গায় লোকেশ রাহুলের সঙ্গে ইনিংসের গোড়াপত্তন করছেন শিখর ধাওয়ান। গত ম্যাচে লোকেশ বড় রান পেলেও চোট সারিয়ে ফেরা শিখর কিন্তু ব্যাট হাতে সেভাবে জ্বলে উঠতে পারেননি। টি-২০ বিশ্বকাপে তৃতীয় ওপেনার হিসাবে যদি স্কোয়াডে জায়গা পেতে হয়, তাহলে ধাওয়ানকে অবশ্যই বড় রান করে টিম ম্যানেজমেন্টের আস্থা অর্জন করতে হবে। কারণ, লোকেশ ধারাবাহিকভাবে রান করছেন। গত ম্যাচেও ৪৫ রানের ঝোড়ো ইনিংস খেলেছিলেন।
ভারতীয় পেসাররা অবশ্য যা সুযোগ পেয়েছেন, কাজে লাগাচ্ছেন। চোটের জন্য ভুবনেশ্বর কুমার, দীপক চাহার বাইরে। মহম্মদ শামি বিশ্রামে। তাঁদের জায়গায় দলে আসা নবদীপ সাইনি এবং শার্দূল ঠাকুর নজর কেড়েছেন। ঘণ্টায় দেড়শো কিলোমিটার গতির উপরে বল করেছেন নবদীপ। যা নিয়ে উচ্ছ্বসিত সঞ্জয় মঞ্জরেকরের মতো প্রাক্তনরা। বুমরাহ চোট সারিয়ে মাঠে ফিরলেও ফর্মে ফিরতে আরও কিছুটা সময় লাগবে তাঁর। দুই স্পেশালিস্ট স্পিনার হতে পারেন ওয়াশিংটন সুন্দর ও যুজবেন্দ্র চাহাল। গত ম্যাচে কুলদীপ যাদব খেলেছিলেন। তাঁর জায়গায় চাহালকে ফেরানো হতে পারে।
অন্যদিকে সিরিজে সমতা ফেরাতে মরিয়া শ্রীলঙ্কা। লাসিথ মালিঙ্গার নেতৃত্বে গত ম্যাচে দ্বীপরাষ্ট্রের ক্রিকেটাররা প্রত্যাশা মতো পারফর্ম করতে পারেননি। তবে এই পুনেতেই চার বছর আগে ভারতকে ৫ উইকেটে হারিয়েছিল শ্রীলঙ্কা। সেই সাফল্য মালিঙ্গাদের মনোবল বাড়াতে পারে। তবে চোটের কারণে ছিটকে গিয়েছেন উদানা। তাঁর জায়গায় খেলতে পারেন বর্ষীয়ান অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউজ। ২০১৮ সালের আগস্টের পর ফের তাঁকে টি-২০ আন্তর্জাতিক মঞ্চে খেলতে দেখা যেতে পারে। শ্রীলঙ্কার ব্যাটিংয়ের বড় ভরসা দানুষ্কা গুণতিলকা, কুশল পেরেরা, আভিষ্কা ফর্নান্ডো। অভিজ্ঞতা কাজে লাগানোর সুযোগ রয়েছে মালিঙ্গার সামনে। তবে বড় চমক দিতে পারেন স্পিনার হাসারাঙ্গা।