জেএনইউ ক্যাম্পাসেএ ছাত্র সংসদের সভানেত্রী ঐশী ঘোষের প্রতি সহানুভূতি যখন উপচে পড়ছে, ঠিক তখনই শুক্রবার বিকেলে দিল্লী পুলিশ চাঞ্চল্যকর দাবি জানাল। এদিন সিটের তরফে সাংবাদিক বৈঠক করে যুগ্ম কমিশনার জয় তিরকে বলেন, ‘৫ জানুয়ারি বিকেলে জেএনইউ-র পেরিয়ার হস্টেলে হামলার চালানোয় নেতৃত্ব দিয়েছিলেন ছাত্র সংসদের সভানেত্রী ঐশী ঘোষ।’ তিনি জানান, তার পর সন্ধ্যায় সবরমতী হস্টেলে হামলা চলে। দিল্লী পুলিশের মুখপাত্র এমএস রান্ধাওয়াকে পাশে নিয়ে তিনি আরও বলেন, হিংসার ঘটনায় ৯ জনকে চিহ্নিত করা হয়েছে। এদের মধ্যে যেমন জেএনইউ-র বিভিন্ন বিভাগের ছাত্রছাত্রীরা রয়েছেন, তেমনই এডুকেশন কাউন্সিলরও রয়েছে।
যুগ্ম কমিশনার তিরকে বলেন, হতে পারে সবরমতী হাসপাতালে বহিরাগতরা হামলা চালিয়েছিল। তবে এও ঠিক যে জেএনইউ-তে বহিরাগতদের ঢুকে পড়া সহজ নয়। কারণ, রেজিস্টারে নাম লিখতে হয়। সঙ্গে কোনও গেস্ট থাকলে প্লাস দিয়ে তাঁদের সংখ্যা লিখতে হয়। তাঁর কথায়, তদন্ত করতে গিয়ে পুলিশের একটু সমস্যা হচ্ছে ঠিকই। কারণ, সিসিটিভি ফুটেজ পাওয়া যাচ্ছে না। বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়াই ফাই বেসড সিসিটিভি ক্যামেরা ছিল। কিন্তু ৩ ও ৪ তারিখ ছাত্র বিক্ষোভের ঘটনায় সেগুলি নষ্ট করা হয়। ফলে প্রত্যক্ষদর্শী ও ভাইরাল ভিডিও-র সাহায্যে দোষীদের চিহ্নিত করতে হচ্ছে।
এদিন তিরকে জানান, ১ জানুয়ারি থেকে শুরু হয়েছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া। তাতে বাধা দেয় চারটি বাম সংগঠন এসএফআই, এআইএসএফ, আইসা ও ডিএসএফ। সার্ভাররুমে চালানো হয় ভাঙচুর। এমনকি যে ছাত্ররা রেজিস্ট্রেশন করতে চেয়েছিলেন, তাঁদের ভয় দেখানো হয়েছিল। মুখোশধারী ছাত্রছাত্রীদেরও শনাক্ত করেছে দিল্লী পুলিশ। হামলার সময় একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপও খোলা হয়েছিল। গ্রূপে ছিলেন ঐশী ঘোষ। বাকিরা হলেন প্রাক্তন ছাত্র চেতন কুমার, পঙ্কজ মিশ্র, ঐশী ঘোষ, ভাস্কর বিজয়, সুচেতা তালুকদার, প্রিয়রঞ্জন, দোলন সামন্ত, যোগেন্দ্র ভরদ্বাজ ও বিকাশ পটেল। যোগেন্দ্র ছিলেন সেই গ্রুপের অ্যাডমিন।
যে ৯ জনকে চিহ্নিত করা হয়েছে তাঁদের ছবি ও নাম এদিন প্রকাশ করে দিল্লী পুলিশ। ৫ তারিখ বিকেলে ইউনিটি এগেন্সট লেফ্ট নামে একটি হোয়াটস অ্যাপ গ্রুপ তৈরি করা হয়েছিল। তার অ্যাডমিন যোগেন্দ্র ভরদ্বাজের ছবিও প্রকাশ করা হয়। তবে যুগ্ম কমিশনার জানান, এখনও পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার বা আটক করা হয়নি। ওই ৯ জনকে নোটিশ পাঠানো হয়েছে। তাঁদের জিজ্ঞেস করা হয়েছে, হিংসার ঘটনায় তাঁদের কী ভূমিকা ছিল তাঁরা তা জানান। তবে কোনওরকম প্রমাণ ছাড়া কিভাবে দোষী সাব্যস্ত করা হলো ঐশীদের, তা নিয়ে শুরু হয়েছে বিস্তর সমালোচনা।