ভোট এলেই স্বপ্নের ফেরিওয়ালার ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়ে প্রতিশ্রুতির ফোয়ারা ছোটান তিনি। কিন্তু ভোট ফুরোতেই দেখা যায় যে তাঁর দেওয়া সকল প্রতিশ্রুতি পূরণেই ব্যর্থ হন তিনি। যেমন আগামী ২০২২ সালের মধ্যে ‘সকলের জন্য বাসস্থানে’র টার্গেট নিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু সময় মতো সেই লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হবে কি না, তা নিয়ে চিন্তায় কেন্দ্র। বিশেষত গ্রামে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার কাজের গতি তেমন আশানুরূপ নয়। তাই কাজের গতি বাড়ানোর পাশাপাশি আদৌ কাজ হচ্ছে কি না বা হলেও কতদিনে কতটা কাজ এগলো, এরকম প্রতিটি পর্বের ছবি তুলে দিল্লীতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্র।
টার্গেট পূরণে মোদী সরকার চাইছে, ব্লকস্তরের অফিসাররা অন্তত কাজের ১০ শতাংশে নজরদারি করুন। একইভাবে জেলাস্তরের অফিসারদের নজরদারিতে থাক কমপক্ষে দু’শতাংশ। বাড়ি তৈরির প্রতিটি পর্বের ছবি তোলা হোক। এবং জিও (জিওগ্রাফিক্যাল) ট্যাগ-সহ তা দিল্লীতে পাঠানো হোক। ট্যাগের ফলে বাড়িটি কোন রাজ্যের, কোন জেলার, কোন ব্লকের, তা জানতে পারা যাবে। বাড়ি তৈরি সম্পূর্ণ হলে ছবি পাঠানো আবশ্যিক।
যদিও যে সমীক্ষার (আর্থ-সামাজিক জাতিসুমারি, ২০১১) ওপর ভিত্তি করে গ্রামে এই বাড়ি তৈরি হচ্ছে, তা কতটা প্রকৃত গরিবরা পাচ্ছে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। ২০১১ সালের ওই গণনার পর ন’বছর পেরিয়ে গিয়েছে। রাজনৈতিক মহলের মতে, এই সময়ের মধ্যে মানুষের অবস্থারও পরিবর্তন হয়েছে। তাই পুরনো তথ্যের ভিত্তিতেই এখনও গরিবদের বাড়ি তৈরির কাজের ক্ষেত্রে নতুন করে সমীক্ষারও দাবি উঠছে বলে জানা গিয়েছে।
উল্লেখ্য, কেন্দ্রে মোদী সরকার ক্ষমতায় আসার পর ‘ইন্দিরা আবাস যোজনা’র নাম বদলে দিয়েছে। ২০১৬ সাল থেকে তার নামকরণ হয় ‘প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা।’ এই প্রকল্পে আগামী ২০২২ সালের মধ্যে গ্রামে সব মিলিয়ে ২ কোটি ৯৫ লক্ষ বাড়ি তৈরির টার্গেট করেছে কেন্দ্র। দুটি পর্যায়ের এটি করার কথা। কিন্তু কাজের গতিতে ২০১৯-২০ সালের মধ্যে যেখানে এক কোটি ৫১ লক্ষ ৫ হাজার ৩৯৬ টি বাড়ি তৈরির টার্গেট নিয়েছে কেন্দ্র, সেখানে মোদি সরকারেই রিপোর্ট বলছে, হয়েছে এক কোটি ৩১ লক্ষ ৫৪ হাজার ৫৭৫ টি বাড়ি। তাই হাতে থাকা আর দু’ বছর অর্থাৎ ২০২২ সালের মধ্যে প্রত্যেকের জন্য বাড়ি করা আদৌ কতটা সম্ভব হবে, তা নিয়ে চিন্তায় মোদি সরকার।