প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ভারত ২০২০ সালে পৃথিবীর পঞ্চম বৃহত্তম ভূ-রাজনৈতিক ঝুঁকির মুখে। অর্থাৎ, ২০২০ সালে পৃথিবীতে যারা বড় বিপদ-আশঙ্কার সামনে দাঁড়িয়ে, তার একটি হলো মোদীর ভারত। সম্প্রতি রিস্ক কনসালটেন্সি ইউরেশিয়া গ্রুপের এক বিশ্লেষণে ২০২০ সালের জন্য সম্ভাব্য ১০টি বড় ভৌগোলিক-রাজনৈতিক বিপদের তালিকা করা হয়েছে। এতে ৫ নম্বরে রাখা হয়েছে ভারতকে।
ইউরেশিয়া গ্রুপের রিপোর্ট বলছে, ‘প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তাঁর দ্বিতীয় দফার শাসনকালে অর্থনীতির উন্নয়নের বদলে নানারকম সামাজিক নীতিই বেশি করে গ্রহণ করেছেন। এর ফল ২০২০-তে পড়বে। যেভাবে সাম্প্রদায়িকতা ও বিভাজন বেড়ে চলেছে, এতে বিদেশ নীতি এবং অর্থনীতি দুই-ই বড়সড় ধাক্কা খাবে এই বছরে।’ এই রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, কাশ্মীর থেকে ৩৭০ ধারা বাতিল, নাগরিকত্ব আইন, এনআরসি নিয়ে উত্তাল হয়েছে দেশ৷ এর ফল পড়বে ২০২০-তে৷ এমনকী সেই রিপোর্টে জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের গণ্ডগোলও মোদীর রিস্ক ফ্যাক্টর হয়ে উঠতে পারে৷
ইউরেশিয়ার তালিকায় এক নম্বরে আছে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নেতৃত্বাধীন আমেরিকার অভ্যন্তরীণ রাজনীতির অস্থিরতা। মার্কিন-চীন বৈরী সম্পর্ক। ইউরেশিয়া গ্রুপ হল একটি বেসরকারি রেটিং এজেন্সি। কোনও দেশের বা এলাকার অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং ঝুঁকি বিশ্লেষণ করে বিনিয়োগকারীদের লগ্নির ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে পরামর্শ দেয় তারা। এই গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা ইয়ান ব্রিমারের দর্শন হল, লগ্নির সিদ্ধান্তের নেপথ্যে আর পাঁচটি বিষয়ের মতো রাষ্ট্রবিজ্ঞানেরও ভূমিকা রয়েছে।
ইয়ান ব্রিমার ২০১৯ সালের ‘টাইম’ ম্যাগাজিনের মে মাসের সংখ্যায় দাবি করেছিলেন, ‘ভারতের অর্থনীতি সংস্কারের সবচেয়ে সেরা আশা হলেন মোদী।’ সেই সংখ্যাতেই অবশ্য অতীশ তসির মোদীকে আখ্যা দিয়েছিলেন ‘প্রধান বিভাজনকারী’ বলে। বছর ঘুরতেই অতীশ তসিরের সঙ্গে একমত হলেন ইয়ান ব্রিমার তথা ইউরেশিয়া গ্রুপ।
শুধু তাই নয়, রিপোর্টে আরও রয়েছে, ‘মোদী সরকারের আমলে বাড়বাড়ন্ত হয়েছে আরএসএস-এর। আরএসএস-কে গুরুত্ব দিতে গিয়ে উন্নয়নের দিকে তাকানোর সুযোগ পাচ্ছেন না মোদী। ছ’বছরে ৪.৫ শতাংশ জিডিপির পতন সে দিকেই ইঙ্গিত করে। এই সব মিলিয়ে ২০২০ সালে বড় ধাক্কার মুখে পড়তে চলেছে ভারত।’