নতুন বছরের শুরুতেই জাতীয় জনসংখ্যা রেজিস্টার (এনপিআর) নিয়ে নতুন করে ধোঁয়াশা তৈরি করে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের একটি সূত্র জানিয়েছে, এবার এনপিআরের কাজেও লাগবে বায়োমেট্রিক তথ্য। বেশ কয়েকটি রাজ্যে এনপিআরে সাম্প্রতিকীকরণের সময় বায়োমেট্রিক তথ্য সংগ্রহ করা হবে। তবে এবার আর কোনও রকম ধোঁয়াশা সৃষ্টি না করে সরাসরি হুঁশিয়ারির পথেই হাঁটল মোদী সরকার। জনগণনা ও এনপিআরের কাজ করতে না চাইলে যে কোনও রাজ্য সরকারি আধিকারিকের ৩ বছরের জেল হতে পারে। ভারত জনগণনা আইন মেনে রাজ্য সরকার ও কর্মচারীদের জনগণনা ও জনসংখ্যাপঞ্জী বা এনপিআরের কাজ করতেই হবে, নাহলে কড়া পদক্ষেপের মুখোমুখি হতে হবে সরকারি আধিকারিকদের। কেন্দ্রের শীর্ষ আধিকারিক সূত্রে এমনই খবর পাওয়া গিয়েছে শুক্রবার।
প্রসঙ্গত, এনআরসি-সিএএ-র মতো এনপিআর নিয়েও আপত্তি তুলেছে বিরোধী দলগুলি। রাজ্যে এনপিআর করতে দেবেন না বলে জানিয়ে ওই কাজ স্থগিত রেখেছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও কেরালার মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন। তাঁদের অভিযোগ, এনপিআরের আসলে এনআরসিই প্রথম ধাপ। এই আবহে দ্য ইকনমিক টাইমস কেন্দ্রের এক শীর্ষ আধিকারিকের তথ্য উদ্ধৃত করে লিখেছে, আদমশুমারি আইন ও নাগরিকত্ব আইন, ২০০৩ মেনে কাজ করার জন্য যে কোনও রাজ্য সরকারি কর্মচারী বাধ্য। এই নাগরিকত্ব আইন ২০০৩ মেনে এনপিআর বা জনসংখ্যাপঞ্জী তৈরি হয়। তাই এনপিআরের কাজ করতে না চাইলে আইন অনুযায়ী ওই সরকারি আধিকারিকের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা যেতে পারে বলে দাবি কেন্দ্রীয় আধিকারিকের। যে কর্মচারীরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে জনগণনার তথ্য সংগ্রহ করবেন এবং জনগণনাকারী অফিসার, উভয়ের ক্ষেত্রেই এই আইন প্রয়োগ হতে পারে।
উল্লেখ্য, ভারতের আদমশুমারি আইন অনুযায়ী, রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের প্রশাসন নির্দেশ অনুযায়ী জনগণনার করেন। এই জনগণনার কাজে প্রিন্সিপাল সেনসাস অফিসার অর্থাৎ জেলা শাসকের ওপর দায়িত্ব থাকে। তারপর থাকেন মহকুমা শাসক, সুপারভাইজার এবং গণনাকারী অফিসার। আদমশুমারি আইনের ১১ নম্বর অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, জনগণনার কাজ করতে কোনও দায়িত্বপ্রাপ্ত সরকারি আধিকারিক অসম্মতি জানালে তাঁর তিন বছরের কারাদণ্ড অথবা জরিমানা হতে পারে। একইরকমভাবে এনপিআর বা জনসংখ্যাপঞ্জির কাজ করতে অস্বীকার করলে সেই আধিকারিক এক হাজার টাকা জরিমানার মুখোমুখি হতে পারেন ২০০৩ সালের নাগরিকত্ব আইনের ১৭ নম্বর অনুচ্ছেদ অনুযায়ী। তাছাড়াও শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে কড়া সাজা পেতে পারেন ওই আধিকারিক।