নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন ইস্যুতে ফের প্রধানমন্ত্রীকে নিশানা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মোদীর পাকিস্তান-মন্তব্যকে একহাত নিয়ে শুক্রবার শিলিগুড়িতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘হিন্দুস্তানের প্রধানমন্ত্রী হয়ে শুধু পাকিস্তানের কথা বলছেন। কথায় কথায় প্রধানমন্ত্রী বলছেন, পাকিস্তানে গিয়ে চর্চা করুন। এটা আমাদের দেশ, আমরা এ দেশ নিয়েই কথা বলব। আমরা পাকিস্তানের কথা শুনতে চাই না। খাবার, চাকরি চাইলে পাকিস্তানের কথা বলা হচ্ছে। নরেন্দ্র মোদীকে প্রশ্ন করতে চাই, আপনি হিন্দুস্তানের প্রধানমন্ত্রী হয়ে পাকিস্তানের কথা বলছেন, আপনার লজ্জা করে না। আপনি কি পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূত?’
উল্লেখ্য, সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে বিরোধীদের প্রতিবাদকে নিশানা করে বৃহস্পতিবার নরেন্দ্র মোদী বলেন, ‘আপনি যদি প্রতিবাদ করতে চান তবে পাকিস্তানে নৃশংসতার বিরুদ্ধে সরব হন। পাকিস্তানের হিন্দু, জৈন, খ্রিস্টান-সহ সংখ্যালঘু মানুষদের উপর গত ৭০ বছর ধরে অত্যাচার করা হয়েছিল। কেন এত বছরেও কংগ্রেস এই ইস্যুটির উত্থাপন করেনি?’
নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদে পথে নেমে ফের জোটবদ্ধ হওয়ার বার্তা দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুক্রবার শিলিগুড়িতে মিছিল শুরুর আগে মমতা বলেন, ‘এখন একটাই প্রশ্ন, আমাদের ভবিষ্যতের ঠিকানা থাকবে কিনা। সকলে একজোট হোন। এটা দ্বিতীয় স্বাধীনতার লড়াই।’
গত সোমবার পুরুলিয়ায় মিছিলে পা মিলিয়ে বিজেপির বিরুদ্ধে লড়তে দেশবাসীকে একজোট হওয়ার বার্তা দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিজেপিকে নিশানা করে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এনআরসির নামে দেশ থেকে মানুষকে বিতাড়িত করার চক্রান্ত করছে বিজেপি। এই চক্রান্তের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে সকলকে আহ্বান জানাচ্ছি। জোট বাঁধুন, তৈরি হন। সারা দেশে বিজেপিকে একা করে দিন।’ পুরুলিয়ায় মিছিল শুরুর আগে মমতা বলেছিলেন, ‘নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে এই প্রতিবাদ জারি থাকবে। এই আন্দোলন গণতন্ত্র রক্ষার আন্দোলন। কাউকে তাড়ানোর অধিকার বিজেপির নেই। দেশের সব জায়গায় এই আন্দোলন হচ্ছে। পড়ুয়ারাও আন্দোলনে শামিল হয়েছেন। তাই তাঁদের ভয় দেখানো হচ্ছে। দেশের স্বাধীনতা আজ বিপদের মুখে।’
এর আগে কলকাতার মিছিল থেকে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, ‘বিজেপিকে বলছি, আগুন নিয়ে খেলবেন না। সরকারি সম্পত্তি নষ্টের আইন আছে। আমরাও তা জানি। কিন্তু এটা স্বতঃস্ফূর্ত আন্দোলন। এখানে এই আইন খাটাইনি আমরা।’ এরপরই বিজেপি নেতৃত্বকে হুঁশিয়ারির সুরে তৃণমূল সুপ্রিমো বলেছিলেন, ‘সারা ভারতবর্ষে অনেক বিরোধী দলের সরকার (অবিজেপি দলের সরকার) রয়েছে। একই রকম দমনমূলক পদক্ষেপ যদি করা হয়, তাহলে কি ভাল হবে? কারও জন্য ভাল হবে না। নিজেদের বিবেক-বুদ্ধি খাটান।’