সিএএ-র সমর্থনে আভা করতে নতুন বছরের শুরুতেই বাংলায় আসার কথা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর। অন্যদিকে তাঁর ডেপুটি অমিত শাহ এই নয়া আইনের সমর্থনেই আজ জনসভা করেছেন রাজস্থানের যোধপুরে। কিন্তু সেই সভাতেও শাহের মূল নিশানায় বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জনগণের উদ্দেশ্যে তিনি বললেন, ‘মমতাকে ভয় পাবেন না, সসম্মানে নাগরিকত্ব নিয়েই বাঁচবেন’।
সিএএ বিরোধিতায় দেশের নানা প্রান্তে যে ভাবে পথে নেমেছে বিরোধী দলগুলি, বিজেপি প্রথমে তার মোকাবিলায় কিছুটা ব্যাকফুটেই ছিল। সংবাদমাধ্যমে বিবৃতি দিয়ে বা সোশ্যাল মিডিয়ায় আক্রমণ করে যাবতীয় সিএএ বিরোধী বক্তব্যের জবাব দেওয়ার চেষ্টা হলেও, মাঠে-ময়দানে পিছিয়েই ছিল দেশের শাসক দল। ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহ থেকে অবশেষে বিজেপিও পথে নামে এবং এখন দলের শীর্ষ নেতৃত্ব গোটা ভারতে সভা করে সিএএ-পন্থী প্রচার তুঙ্গে তোলার চেষ্টা শুরু করে দিয়েছেন। সেই প্রচারাভিযানের অঙ্গ হিসেবেই শুক্রবার রাজস্থানের যোধপুরে জনসভা করেন বিজেপি সভাপতি তথা দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।
এ দিন রাজস্থানের জনসভা থেকে তাঁদের আশ্বস্ত করার চেষ্টা করেন শাহ। তিনি বলেন, ‘আমি আপনাদের আশ্বস্ত করছি। আপনারা অত্যাচারিত হয়ে এসেছেন। এখানে কোনও অত্যাচার সহ্য করতে হবে না। সম্মানের সঙ্গে নাগরিকত্ব নিয়ে এখানে থাকবেন। মমতাদিদিকে ভয় পাবেন না।’
কংগ্রেস, আপ, এসপি, বিএসপি-কেও এ দিন মমতার তৃণমূলের সঙ্গে একই পঙ্ক্তিতে বসিয়ে তোপ দেগেছেন অমিত শাহ। এই দলগুলি মিলে দেশের মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে বলে তিনি অভিযোগ করেছেন। শনিবার থেকে আরও বড় প্রচারাভিযান শুরু হচ্ছে, বিজেপি কর্মীরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে সিএএ সম্পর্কে বোঝানো শুরু করছেন— জানিয়েছেন অমিত শাহ। তবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে তাঁর আক্রমণের স্বর ছিল সবচেয়ে চড়া।
কারণ হিসেবে উঠে আসছে কিছু তথ্য। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের আগেও ঠিক এই ভাবেই বিজেপির আক্রমণের অন্যতম প্রধান লক্ষ্য হয়ে উঠেছিলেন মমতা। বিরোধী জোট তৈরিতে উদ্যোগী হওয়া, দেশের সব বিরোধী দলকে একমঞ্চে হাজির করে কলকাতার ব্রিগেড ময়দানে সমাবেশ করা- এই সব নানা কারণে বিজেপির কাছে সাংঘাতিক ভাবে চক্ষুশূল হয়ে উঠেছিলেন মমতা। আর এখন সিএএ বিরোধিতার প্রশ্নেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই যে পদ্মশিবিরের সবচেয়ে বড় ‘পথের কাঁটা’, তা শাহের এদিনের মন্তব্যে দিনের আলোর মত পরিষ্কার।