নাগরিকত্ব নিয়ে আন্দোলনকে এবার দলের প্রতিষ্ঠা দিবস পালনের সঙ্গে জুড়ে দিতে চলেছে তৃণমূল। মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেত্রী ইতিমধ্যেই ঘোষণা করেছেন, আগামী ১ জানুয়ারি রাজ্য জুড়ে নাগরিক দিবস পালিত হবে। ফলে প্রতিষ্ঠা দিবসের চিরাচরিত কর্মসূচির সঙ্গে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন বা সিএএ এবং জাতীয় নাগরিকপঞ্জি বা এনআরসি বিরোধী প্রচার অভিযানও চলবে।
আসন্ন ইংরেজি নববর্ষে তৃণমূল একুশ বছর পূর্ণ করবে। প্রতি বছরই এই দিনটিকে তৃণমূল প্রতিষ্ঠা দিবস হিসেবে পালন করে। দলীয় দপ্তরে পতাকা উত্তোলন ও শহিদ বেদিতে ফুল দেওয়া হয়। এর পাশাপাশি রক্তদান, শীতবস্ত্রদান থেকে শুরু করে ক্রীড়া প্রতিযোগিতা সহ নানাবিধ সামাজিক অনুষ্ঠানের আয়োজনের চল রয়েছে তৃণমূল মহলে। গত বছর সপ্তম লোকসভা ভোটের প্রেক্ষিতে ১৯ জানুয়ারি তৃণমূল ব্রিগেডে জনসভার ডাক দিয়েছিল। তাই দলের প্রতিষ্ঠা দিবসকে ব্রিগেডের প্রচারের কাজে লাগিয়েছিল তৃণমূল নেতৃত্ব। তৃণমূলের মতে, এবার দেশজুড়ে কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের বিরোধিতায় মানুষ সরব হয়েছে। নাগরিকত্ব নিয়ে বিজেপি যে আইন সংসদে পাশ করিয়েছে, তা প্রত্যাহারের দাবিতে সরব হয়েছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। তিনি জানিয়েছেন, এই আইন প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত তাঁরা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন। ইতিমধ্যে ‘আমরা নাগরিক’- এই স্লোগান তুলে দফায় দফায় পদযাত্রা করেছেন মমতা। তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় জানান, মুখ্যমন্ত্রী পরিষ্কার ভাষায় জানিয়ে দিয়েছেন, ধর্মের নামে বিজেপি মানুষকে ভাগাভাগি করতে চাইলেও, বাংলা তা মেনে নেবে না। দলের সাংগঠনিক বৈঠকে তিনি নতুন নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদে শান্তিপূর্ণ প্রচার আন্দোলন গড়ে তোলার নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি নিজেও মিছিল করছেন, সভাও করছেন। রাজ্যের সমস্ত বুথ স্তরে এই বিষয়ে বিজেপি বিরোধী প্রচার নিয়ে মানুষের কাছে পৌঁছতে বলেছেন। প্রতি বিধানসভায় একদিনের গণ-অবস্থান কর্মসূচি পালিত হয়েছে।
তৃণমূলের প্রতিষ্ঠা দিবসে অন্যান্য কর্মসূচির সঙ্গে নাগরিক দিবস পালন করা হবে। রাজ্যে যে কারও নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া যাবে না, মুখ্যমন্ত্রী একাধিকবার সেই বিষয়ে অভয় দিয়েছেন। নাগরিক দিবসে তৃণমূলের প্রধান উদ্দেশ্য হল, রাজ্যবাসীর কাছে মুখ্যমন্ত্রীর সেই অভয়বাণী পৌঁছে দেওয়া। সব মিলিয়ে নাগরিকত্ব নিয়ে বিজেপির বিপজ্জনক উদ্যোগ সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করে তোলাই হবে তৃণমূলের প্রতিষ্ঠা দিবসের প্রধান কাজ।