সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন পাশ হওয়ার পর থেকেই উত্তপ্ত রয়েছে ভারতীয় রাজনীতি। গত ১৫ দিন ধরে চলা বিক্ষোভের আগুনে পুড়ে ছাই হয়েছে বহু সরকারি ও বেসরকারি সম্পত্তি। পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে গোটা দেশে এখনও পর্যন্ত কমপক্ষে ৩০ জন বিক্ষোভকারীর মৃত্যুও হয়েছে। জখমের সংখ্যাটা শতাধিক। উত্তরপ্রদেশ ও দিল্লী-সহ বিভিন্ন রাজ্যে অনেক বিক্ষোভকারী জেলবন্দিও রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে বিএসএফের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের জন্য ভারত সফরে এসেছিলেন বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড-এর একটি প্রতিনিধি দল। নেতৃত্বে ছিলেন ডিজি শাফিনুল ইসলাম। দু’দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর ডিজি লেভেলের আধিকারিকদের নিয়ে ৪৯ তম দ্বিপাক্ষিক বৈঠক শেষ হওয়ার পর দিল্লিতে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন তিনি। আর সেখানেই ভারত থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে যাওয়ার সময় ৩০০ জন অনুপ্রবেশকারীকে আটক করার কথা জানান তিনি।
গত চার দিন ধরে দিল্লীতে দুই বাহিনীর বৈঠকের শেষে আজ বর্ডার গার্ডস বাংলাদেশ (বিজিবি)-এর ডিজি সাফিনুল ইসলাম জানান, ‘‘ভারত থেকে অবৈধ ভাবে বাংলাদেশে প্রবেশের পরে গত এক বছরে প্রায় ৩০০ জনকে আটক করা হয়েছে। কাগজপত্র দেখাতে না-পারলেও এদের দেওয়া তথ্য যাচাই-বাছাই করে দেখা গিয়েছে, এরা সকলেই বাংলাদেশের নাগরিক। জীবিকার সন্ধানে বা অন্য কারণে এরা বৈধ কাগজ ছাড়া ভারতে গিয়েছিলেন।’’ সূত্রের দাবি, ৩০০ জন ধরা পড়লেও কাগজপত্র ছাড়া ভারতে যাওয়া বহু মানুষ বাংলাদেশের বিভিন্ন গ্রামে ফিরে এসেছেন বলে খবর মিলেছে।
ধৃতদের কাছ থেকে বাংলাদেশের নাগরিকত্বের কোনও কাগজ পাওয়া যায়নি। তবে তাদের জেরা করে পাওয়া তথ্য মিলিয়ে দেখা গিয়েছে প্রত্যেকেই বাংলাদেশের নাগরিক। আর বেশিরভাগই কাজের সন্ধানে ভারতে ঢুকে বিভিন্ন জায়গায় বসবাস করছিল। তবে কেউ কেউ আত্মীয়দের বাড়িতে ঘুরতেও এসেছিল। কিন্তু, কোনও বৈধ কাগজ তাদের কাছে ছিল না।’
দু’দেশের আলোচনায় উঠে এসেছে অক্টোবরে পদ্মায় ইলিশ ধরতে গিয়ে ভারতীয় মৎস্যজীবীর আটক ঘিরে দু’দেশের সীমান্তরক্ষীদের মধ্যে হওয়া গোলাগুলির বিষয়টিও। বিএসএফের জওয়ান বিজয়ভান সিংহ এই ঘটনায় মারা যান। গুলি চালানোর অভিযোগ ওঠে বিজিবি-র এক জওয়ানের দিকে। দু’দেশের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সীমান্ত থাকা সত্ত্বেও গুলিতে এ ভাবে এক জওয়ানের মৃত্যুকে দুর্ভাগ্যজনক ও অপ্রত্যাশিত ঘটনা বলেই দাবি করেছেন দুই বাহিনীর প্রধান।