সংবিধান সংশোধন করে খোদ কেন্দ্রই প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, জিএসটি থেকে রাজ্যগুলির পর্যাপ্ত আয় না হলে সেই ক্ষতি পূরণ করে দেওয়া হবে। কিন্তু মন্দার বাজারে রাজকোষের হাল এতটাই করুণ যে, প্রতিশ্রুতি মত রাজ্যগুলিকে জিএসটি বাবদ ক্ষতিপূরণও মেটাতে পারছে না তারা। এই পরিস্থিতিতে মোদী সরকারকে চেপে ধরতে এবার কোমর বেঁধে নামছে সংসদের পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটি (পিএসি)।
জিএসটি নিয়ে ব্যবসায়ী-সহ দেশের সাধারণ মানুষের মনে কী প্রশ্ন রয়েছে, তা নিয়ে খবরের কাগজে বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে তা জানতে চেয়েছিল কমিটি। ইতিমধ্যেই প্রায় কয়েক হাজার চিঠি এসেছে। আরও আসছে। চিঠিগুলি একাট্টা করে সরকারের কাছে বক্তব্য জানতে চাওয়ার পাশাপাশি বাংলার অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র-সহ অন্যান্য রাজ্যের অর্থমন্ত্রীকেও শীঘ্রই ডাকবেন বলে ঠিক করেছেন পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির চেয়ারম্যান তথা কংগ্রেসের লোকসভার নেতা অধীররঞ্জন চৌধুরি।
জানা গেছে, অমিত মিত্রর মতো অর্থনীতিবিদদের কাছ থেকে জিএসটি সংক্রান্ত পরামর্শ আদায়ের পাশাপাশি কোনও প্রস্তাব থাকলে তা অস্ত্র করে মোদী সরকারকে আরও চেপে ধরতে চায় পিএসি। একইসঙ্গে দেশের আর্থিক হিসেবনিকেশ নিয়ে সরকার তথা সরকারি সংস্থাগুলির বক্তব্য জানতে কমিটির কাজে আরও গতি আনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
দেশে কর ব্যবস্থা সহজ করার লক্ষ্যে কংগ্রেস জিএসটি নিয়ে উদ্যোগী হলেও মোদী সরকার যে আকারে পণ্য ও পরিষেবা কর চালু করেছে, তাতে দেশের ব্যবসায়ী, বিশেষত ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা প্রভূত সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছেন বলে অভিযোগ। কেন্দ্র বারবার জিএসটির হার বদলানোর পাশাপাশি নিয়ম বদলানোয় কর জমা বা আদায়ের ক্ষেত্রে জটিলতা তৈরি হয়েছে বলেও অভিযোগ কম নয়। রাজ্যগুলির পাওনার ক্ষেত্রেও সমস্যা হচ্ছে বলে ইতিমধ্যেই কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনকে চিঠি দিয়েছেন অমিত মিত্র।
তাই অমিত মিত্রর মতো জিএসটি সম্পর্কে ওয়াকিবহাল ব্যক্তিত্বদের পিএসসি’তে ডাকা হবে বলে জানা গিয়েছে। উল্লেখ্য, ইতিমধ্যে মূল কমিটিকে অক্ষত রেখে তিনটি সাব-কমিটি গড়া হয়েছে। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইন্দ্রকুমার গুজরালের পুত্র রাজ্যসভার এমপি শিরোমণি অকালি দলের নরেশ গুজরাল, ডিএমকের লোকসভার নেতা টি আর বালু এবং গুজরাতের বিজেপি এমপি সুভাষচন্দ্র বেহেরিয়াকে ওই কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে। এবার চাইলে চেয়ারম্যানের অনুমতিক্রমে তাঁরা পৃথক বৈঠকও ডাকতে পারবেন।