নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল পার্লামেন্টের দুই কক্ষে পাশ হয়ে যাওয়ার পর রাষ্ট্রপতির স্বাক্ষরে তা আইনে পরিণত হয়ে গেছে। তবে এই আইন নিজেদের রাজ্যে কার্যকর করতে দেবেন না বলে হুঙ্কার দিয়েছেন দেশের বেশিরভাগ অ-বিজেপি মুখ্যমন্ত্রীরা। কিন্তু সেখানে চাপে পড়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেছিলেন, দেশে কোনও ডিটেনশন ক্যাম্প নেই। এবার মোদীর বক্তব্যের পাল্টা দিলেন আসামের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈ। শুক্রবার তিনি বলেন, অটলবিহারী বাজপেয়ীর আমলেই বিভিন্ন রাজ্যকে ডিটেনশন ক্যাম্প বানাতে বলা হয়েছিল। মোদী ক্ষমতায় আসার পরে তাঁকে ডিটেনশন ক্যাম্প বানানোর জন্য ৪৬ কোটি টাকা দিয়েছিলেন।
তাঁর কথায়, “বাজপেয়ী সরকারের আমলে প্রথমে ডিটেনশন ক্যাম্পের কথা শোনা যায়। বলা হয়েছিল, যে বিদেশিরা অনুপ্রবেশ করার পরে জেলে আছেন, তাঁদের কারাবাসের মেয়াদ ফুরিয়ে গেলে আটকে রাখা হবে ডিটেনশন ক্যাম্পে। মোদী ক্ষমতায় আসার পরে বৃহত্তম ডিটেনশন সেন্টার বানানোর জন্য ৪৬ কোটি টাকা দিয়েছিলেন। সেখানে ৩ হাজার মানুষকে রাখার কথা হয়েছিল। এখন তিনি কীভাবে বলছেন যে, দেশে কোনও ডিটেনশন সেন্টার নেই?”
২০০১ থেকে ২০১৬ পর্যন্ত গগৈ আসামে কংগ্রেস সরকারের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন। তিনি বলেন, তাঁর আমলে ডিটেনশন সেন্টার তৈরি হয়েছিল। গুয়াহাটি হাইকোর্ট বলেছিল, যারা ঘোষিত বিদেশি, তাদের রাখার জন্য ডিটেনশন ক্যাম্প বানাতে হবে। তরুণ গগৈয়ের মতে, মোদী সরকার এখন ‘মুখরক্ষার জন্য’ বলছে, দেশে কোনও ডিটেনশন সেন্টার নেই।
তাঁর কথায়, “২০১৪ সালে মোদী যখন প্রধানমন্ত্রী হলেন, তিনি যথাযথ গুরুত্ব দিয়ে রাজ্যগুলির সঙ্গে অনুপ্রবেশকারী বা ডিটেনশন সেন্টার নিয়ে আলোচনা করেননি। এমনকি বাংলাদেশের সঙ্গেও বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেননি। এখন তিনি সবাইকে বোঝাতে চাইছেন, সরকার খুব উদার। আমরা কাউকে আটক করি না।”
তরুণ গগৈ বলেন, অনুপ্রবেশকারীদের চিহ্নিত করা বা তাদের আটক করার ক্ষেত্রে কারও ধর্মীয় পরিচয় দেখা উচিত নয়। তাঁর কথায়, “বাস্তবে ডিটেনশন ক্যাম্পে মুসলিমদের চেয়ে হিন্দুরাই বেশি আছেন। কে এই হিন্দুদের আটক করেছে? বিজেপিই করেছে।”