সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন ও জাতীয় নাগরিক পঞ্জি নিয়ে দেশ জোড়া বিক্ষোভের মুখে পড়ে আস্তিন থেকে এ বার সেই পুরনো অস্ত্রই বের করে এনেছেন অমিত শাহ। গতকাল দিল্লীতে একটি নির্বাচনী জনসভার মঞ্চ থেকে সিএএ ও এনআরসি নিয়ে দিল্লীতে চলা বিক্ষোভের জন্য কংগ্রেস-সহ বিরোধীদেরই দায়ী করেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। একই সঙ্গে দিল্লীর বিধানসভা ভোটে ‘টুকরে টুকরে গ্যাং-কে শিক্ষা’ দেওয়ার আহ্বানও জানিয়েছেন তিনি। এবার তার পালটা দিলেন যশবন্ত সিনহা।
২৪ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই পাল্টা অমিতকে নিশানায় নিলেন প্রাক্তন বিজেপি নেতা তথা বাজপেয়ীর জমানার কেন্দ্রীয় মন্ত্রী যশবন্ত সিনহা। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বয়ানের পাল্টা দিয়ে তিনি বলেছেন, ‘ভারতের সবচেয়ে বিপজ্জনক টুকরে-টুকরে গ্যাং-এ কেবল দু’জন রয়েছেন, দুর্যোধন ও দুঃশাসন। দু’জনেই বিজেপিতে রয়েছেন সবাই সাবধান থাকুন।’ স্পষ্টত নরেন্দ্র মোদী এবং অমিত শাহকে নিশানায় নিয়েই এই উক্তি করেছেন তিনি। বাজপেয়ী সরকারে অর্থ এবং বিদেশমন্ত্রক সামলেছেন যশবন্ত। কিন্তু মোদী-শাহের ‘একনায়কতন্ত্র’-এর জমানায় গত বছরই বিজেপি ছাড়েন তিনি।
নাগরিকত্ব আইন ও এনআরসির প্রতিবাদে শুরু থেকেই সুর চড়িয়েছে কেন্দ্র-বিরোধী একাধিক রাজনৈতিক দল। দেশের একাধিক শহরে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে পথে নেমে চলে বিক্ষোভ। রাজনৈতিক দলের পাশাপাশি কেন্দ্র-বিরোধিতায় সরব হন একাধিক সংগঠনের সদস্যরাও। কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা কেন্দ্রের বিরুদ্ধে পথে নেমে আন্দোলন শুরু করেন। দেশের বিভিন্ন অংশের পাশাপাশি কেন্দ্র-বিরোধিতায় উত্তাল হয় রাজধানী দিল্লিও।
নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদে বিক্ষোভ শুরু করেন দিল্লীর জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা। বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে পড়ুয়াদের জমায়েত হতেই ঢোকে পুলিশ। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়াই ক্যাম্পাসে ঢোকে পুলিশ। আন্দোলন রুখতে পড়ুয়াদের বেধড়ক মারধরের অভিযোগ ওঠে পুলিশের বিরুদ্ধে। পুলিশের বেপরোয়া লাঠিচার্জে জখম হন বেশ কয়েকজন পড়ুয়া। জামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢুকে রীতিমতো খুঁজে বের করে পড়ুয়াদের উপর অত্যাচারের অভিযোগ ওঠে পুলিশের বিরুদ্ধে।
সেই ঘটনায় তোলপাড় হয় গোটা দেশ। এরপর ২০ ডিসেম্বর দিল্লীর দরিয়াগঞ্জেও অশান্তি ছড়িয়ে পড়ে। পথে নেমে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সুর চড়াতে থাকেন মানুষ। রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে চলে অবরোধ। একাধিক গাড়িতে আগুন ধরানোর ঘটনা ঘটে। পুলিশকে লক্ষ্য করে চলে পাথরবৃষ্টি। একইভাবে দিল্লীর জামা মসজিদ চত্বরেও পরে ছড়িয়ে পড়ে বিক্ষোভ।