‘বিজেপি ঘৃণার রাজনীতি করছে, আমরা ভালবাসার রাজনীতি করছি।’ নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদে এদিন পঞ্চমবার পথে নেমে ফের একবার গর্জে উঠলেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার রাজাবাজার থেকে মল্লিকবাজার পর্যন্ত এক শান্তিপূর্ণ মিছিলে অংশ নেন তিনি। মল্লিকবাজার পৌঁছে ফের একবার কেন্দ্রের ওপর আক্রমণ শানান মমতা। বলেন, ‘ওরা এক এক সময় এক এক কথা বলছে। সকালে এক কথা, রাতে আরেক। ওদের ফাঁদে কেউ পা দেবেন না।’
সম্প্রতি নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদে বিক্ষোভ দেখাতে গিয়ে ১৮ জনের মৃত্যু হয়েছে উত্তরপ্রদেশে। নিহতদের পরিবারের পাশে দাঁড়াতে তৃণমূলের এক প্রতিনিধিদল লক্ষৌ পাঠিয়েছিলেন মমতা। কিন্তু তাদের বিমানবন্দর থেকে বের হতে দেওয়া হয়নি। সেই নিয়ে সরব হয়ে মমতা বলেন, ‘১৪৪ ধারা থাকলে ৪ জন ঢোকা যায়, তৃণমূলের কাউকে ঢুকতে দেয়নি। ওরা কি আমায় আইন শেখাচ্ছে? মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করা হচ্ছে।’ এনআরসি বা এনপিআর যে তিনি করবেন না তা স্পষ্ট করে দেন। মমতা স্পষ্ট বলেন, ‘বলছে ‘তোমার বাবার জন্মদিন কবে?’, ‘আমাকে মেরে ফেললেও আমি বলব না’।
ছাত্রদের উদ্দেশ্যে মমতা বলেন, ‘জামিয়া মিলিয়া থেকে শুরু করে দেশের সকল ছাত্রদের পাশে আমরা রয়েছি। আন্দোলনের ধার যেন কম না হয়।আন্দোলন করলেই পড়ুয়াদের হুমকি দেওয়া হচ্ছে। ছাত্রদের ওপর জুলুম হলে আমরা রুখে দাঁড়াবো। মানুষের সমর্থন থাকা আন্দোলনের চেহারা আমি জানি।’
এদিন মিছিল শুরুর আগেই ফের একবার কেন্দ্রকে আক্রমণ শানান মমতা। এনআরসি নিয়ে কেন্দ্র সুর নরম করলেও প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কথার খেলার ফাঁদে যে তিনি পা দিতে নারাজ, তা বুঝিয়ে দিয়েছেন। অন্যদিকে আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে ধ্বংসলীলা চালানোর অভিযোগে বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলি কড়া পদক্ষেপ নিলেও সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন তিনি।
নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদে শহরের বুকে এই নিয়ে পঞ্চম পদযাত্রা করলেন তৃণমূল নেত্রী। মিছিলের আগে সভা থেকে কর্ণাটকে নিহত দুই ব্যক্তির পরিবারের পাশে থাকবেন বলে জানান তিনি। প্রসঙ্গত, গতকালই নিহত ওই দুই ব্যক্তির পরিবারের উদ্দেশে ১০ লক্ষ টাকার ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করেছিলেন বিজেপি মুখ্যমন্ত্রী বিএস ইয়েদুরিয়াপ্পা। কিন্তু কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই তা প্রত্যাহার করে নিয়ে বলেন, বিক্ষোভকারীদের কোনও সাহায্য করবে না সরকার। বিজেপি সরকারের এই আচরণে তিনি খুব কষ্ট পেয়েছেন বলে জানিয়ে মমতা বলেন, ‘তৃণমূল গরীব দল হলেও মানুষের পাশে ও মানুষের সাথে থাকে।’ এই বলে ঘোষণা করেন, ‘তৃণমূল ট্রেড ইউনিয়নের পক্ষ থেকে আর্থিক সাহায্য করা হবে কর্ণাটকে মৃতদের পরিবারকে।’