দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ক্যারিশমার পাশাপাশি তাঁর কৌশলেই রাজ্যের ৩ কেন্দ্রের উপনির্বাচনে ‘হ্যাটট্রিক’ করেছে শাসক দল তৃণমূল। এবার দলের ভোট কৌশলী প্রশান্ত কিশোরকে তৃণমূল স্তরে পাঠানোর পরিকল্পনাও নিল দল। নানা কর্মসূচীতে যেমন পিকের কাছে পরামর্শ চেয়ে নিচ্ছে শীর্ষ নেতৃত্ব। ঠিক তেমনভাবেই এবার দলীয় ছোট বৈঠকেও প্রশান্তকে সামনে এগিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। শীর্ষ নেতৃত্বের তরফে জানা গিয়েছে, প্রশান্ত কিশোরকে এবার দলের সব বৈঠকেই ডাকা হবে। তিনি নেতা-কর্মীদের সঙ্গে সরাসরি কথা বলবেন, তথ্য আদানপ্রদান করবেন। প্রয়োজনে একাধিক পরামর্শ দেবেন। গোটা প্রক্রিয়ায় পাশে থাকবে দলীয় নেতৃত্ব।
প্রসঙ্গত, সদ্য নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন ও এনআরসি নিয়ে সরাসরি ময়দানে নেমেছেন পিকে। নিশানা করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন তাঁর বিজেপি সরকারকে। প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেসকেও ছাড়েননি জেডিইউ-এর এই নেতা। এই ইস্যুতে পাঞ্জাব, কেরালা, দিল্লী ও বাংলায় সরাসরি সরকারিভাবে বিরোধিতায় নামলেও আর কোনও রাজ্য পরিষ্কার ভাবে বিরোধিতার কথা বলছে না। এমন একটা ইস্যুতে রাজনৈতিক কর্মসূচী নিয়ে যেমন তৃণমূল পথে নেমেছে, তেমনই তাদের নির্বাচনী কৌশলীও পৃথকভাবে প্রকাশ্যে এসেছে। এমনকী পিকের পরামর্শে কিছু দলগত কৌশলও নেওয়া হয়েছে। তা দেখেই দলের একাধিক জেলা নেতৃত্ব একযোগে জানিয়েছেন, শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে কথা বলে যেভাবে প্রশান্ত কিশোর দলকে নানা পরামর্শ দিচ্ছেন, সেভাবেই নিচু স্তরের নেতা-কর্মীদের থেকেও তিনি তথ্য নিন।
এ নিয়ে এক শীর্ষনেতার কথায়, ‘আমরা ইতিমধ্যেই প্রশান্তকে সামনে এগিয়ে দেওয়ার কাজ শুরু করেছি। দলীয় বৈঠকে প্রশান্ত সকলের সঙ্গে কথা বলছেন। প্রয়োজনীয় তথ্য নিচ্ছেন। দরকারমতো পরামর্শও দিচ্ছেন।’ এর ফলে দলের শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে কোনও কারণে নিচুস্তরের দূরত্ব তৈরি হলে এই পথে সহজেই তা মিটবে বলে মনে করছে দল। নেতৃত্বের কথায়, ‘এতে বেশ লাভই হচ্ছে। সকলে বাড়তি আগ্রহ নিয়ে প্রশান্তর সঙ্গে কথা বলতে চাইছে। তাঁকে তথ্য দিতে চাইছে। সরাসরি দলকে কোনও গোপন তথ্য দিতে অনেকেরই অনেক সময় সমস্যা থাকে। অনেকে সংশয়েও থাকেন। সেক্ষেত্রে অনেক জায়গায় বাড়তি আগ্রহ দেখা যাচ্ছে পিকের কাছে সেই কথা বলার ক্ষেত্রে।’